অগ্নিকাণ্ডে জখম হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন। ছবি: রয়টার্স।
মেক্সিকো সীমান্তবর্তী শহর শিউড্যাড হুয়ারেজ়ে শরণার্থীদের জন্য তৈরি এক বন্দি শিবিরে ভয়াবহ আগুন প্রাণ কাড়ল ৩৯ জনের।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, আমেরিকা সীমান্তবর্তী মেক্সিকান শহর শিউড্যাড হুয়ারেজ়ের ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন ইনস্টিটিউট-এ সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা নাগাদ ওই আগুন লাগে। সে সময়ে ওই শিবিরে মোট ৬৮ জন শরণার্থী ছিলেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তাঁদের বেশিরভাগই মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন শহরের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে। এই অগ্নিকাণ্ডে জখম হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। আমেরিকায় অনুপ্রবেশের চেষ্টায় মেক্সিকোর ওই সীমান্ত শহরে ভিড় জমানো ওই বন্দিদের মধ্যে এত জনের মৃত্যু সাড়া ফেলে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।
শিবির কর্তৃপক্ষের তরফে মৃতের সংখ্যা ৩৯ দাবি করা হলেও আদতে তা আরও বেশি বলেই দাবি করছে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন। ওই শিবিরের বাইরে ব্যাগ বন্দি দেহের সংখ্যা সেই প্রমাণ আরও জোরালো করছে বলেই মত তাদের। মৃতদের পরিচয় জানতে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলির সঙ্গে। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, এই ঘটনায় মৃতদের অধিকাংশই ভেনেজ়ুয়েলার নাগরিক।
কী ভাবে এই আগুন লাগল তা নিয়ে এখনও কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন ইনস্টিটিউটের তরফে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, আগুন লাগার ঠিক আগে ওই শিবিরে একটি অশান্তির সূচনা হয়েছিল বলে জেনেছে তারা। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেল। পৌঁছে গিয়েছেন তদন্তকারীরাও।
আমেরিকান সীমান্ত প্রদেশ টেক্সাসের এল পাসোর কাছে অবস্থিত বলে মেক্সিকোর এই শহরে প্রতি বছর ভিড় জমান বহু মানুষ। তাঁদের সকলের চোখে একটাই স্বপ্ন—আমেরিকায় ঠাঁই পাওয়া। যদিও কড়া অভিবাসন নীতির ফাঁদে পড়ে তাঁদের অধিকাংশের স্বপ্নেই দাঁড়ি পড়ে অকালেই। ঠিকানা হয় এই ধরনের বন্দি শিবিরগুলিতে। ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গ্যানাইজ়েশন ফর মাইগ্রেশন’ বা আইওএম-এর প্রকাশিত এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে, ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমেরিকায় ঢোকার স্বপ্নপূরণ করতে আসা কমপক্ষে ৭৬৬১ জন মানুষ নয় প্রাণ হারিয়েছেন বা উধাও হয়ে গিয়েছেন। আর বিশেষত দুর্ঘটনা বা অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে পাচার হয়ে আসতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৮৮ জন।