সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলেছে প্যারিসের সেন্ট ডেনিস এলাকা। ছবি: রয়টার্স।
অবশেষে ‘কব্জা’য় প্যারিস হামলার দুই মূল চক্রী সালাহ আবদেসসালাম এবং আবদেল হামিদ। প্যারিসের উত্তর শহরতলির সেন্ট ডেনিসে’র একটি বাড়িতে তাদের ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। দু’পক্ষেই তীব্র গুলি বিনিময় চলছে। তবে বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দিয়েছে ফরাসি সরকার। সালাহ ও হামিদের পালিয়ে বাঁচা এ বার অসম্ভব, বলছে প্রশাসন।
বুধবার ভোর থেকেই তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে প্যারিসের উত্তর শহরতলি সেন্ট ডেনিসে। ফ্রান্সের ইতিহাসে ভয়াবহতম জঙ্গিহানার পর পাঁচ দিন কেটেছে মাত্র। এর মধ্যেই ফের গোলাগুলি আর পর পর বিস্ফোরণে গোটা শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এ দিন ভোর থেকে। জঙ্গিহানার পর থেকেই জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে গোটা ফ্রান্সে। প্যারিস ও লাগোয়া এলাকায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী কয়েকদিন ধরে জোর তল্লাশি চালাচ্ছে জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্রীদের খোঁজে। সূত্রের খবর, বুধবার প্যারিসের উত্তর শহরতলিতে সে রকমই একটি অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। সেন্ট ডেনিস এলাকায় একটি বাড়িতে প্যারিস হামলার মূল চক্রী সালাহ আবদেসসালাম এবং আবদেল হামিদ আবু ওউদ লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। তখনই পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবৃষ্টি শুরু হয় সেই বাড়িটির ভিতর থেকে। প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও ধাক্কা সামলে পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে পুলিশ। জঙ্গিরা এর পর বিস্ফোরণ ঘটাতে শুরু করে। তবে প্রস্তুতি নিয়েই এ দিন ময়দানে নেমেছে পুলিশ। ফলে বিস্ফোরণ ঘটিয়েও পালানোর পথ পরিষ্কার করতে পারেনি জঙ্গিরা। যে বাড়িতে তারা লুকিয়ে রয়েছে, সেটি সব দিক দিয়েই পুলিশ ঘিরে ফেলেছে। এখনও গুলি বিনিময় চলছে।
ফ্রান্সের স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ লড়াই শুরু হয়েছে। প্যারিসে হামলার পর দিনই সালাহ এবং হামিদের নামে হুলিয়া জারি হলেও বার বার পুলিশ এবং সেনার ফাঁদ এড়িয়ে পালাতে সক্ষম হচ্ছিল হামলার এই মূল চক্রীরা। বুধবার আর শেষ রক্ষা হল না। যে ভাবে বিশাল বাহিনী গোটা সেন্ট ডেনিসের দখল নিয়েছে, তাতে এই জঙ্গিদের পালানো প্রায় অসম্ভব। লড়াই শুরু হতেই এ দিন এলাকা ছেড়ে পালাতে শুরু করেন স্থানীয় মানুষ। বড় জঙ্গিহানা হয়েছে বলে জল্পনা শুরু হয় গোটা প্যারিসে। পুলিশ স্থানীয়দের সরিয়ে নিয়ে যায় টাউন হলে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন দুই পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। যে বাড়িটি ঘিরে অভিযান চালানো হচ্ছে, সেখানে সালাহ ও হামিদ ছাড়াও অন্তত আরও এক জন রয়েছে বলে পুলিশের অনুমান।