প্রতীকী চিত্র।
বছরখানেক আগে এক কট্টরপন্থী ইসলামিক গোষ্ঠী ভাঙচুর চালিয়েছিল শতাব্দীপ্রাচীন এই মন্দিরে। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের করক জেলার তেরি গ্রামে মহারাজ পরমহংসজির সেই মন্দির ও সমাধিক্ষেত্রটি সম্প্রতি সংস্কার করে পাকিস্তানের ইমরান খান সরকার। সেই মন্দিরে এ বার পুজো দিয়ে প্রার্থনা করলেন ভারত, দুবাই, আমেরিকা ও উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে আসা দুই শতাধিক হিন্দু পুণ্যার্থী।
গত কাল সন্ধেয় শুরু হওয়া প্রার্থনা ও বিশেষ পুজো শেষ হয় আজ দুপুরে। গোটা অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল পাকিস্তানি হিন্দু কাউন্সিল এবং পাকিস্তান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স। লাহোরের কাছে ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে পু্ণ্যার্থীরা গত কাল পাকিস্তানে ঢোকেন। ভারত থেকেই এসেছিলেন কমপক্ষে ২০০ জন পুণ্যার্থী। ১৫ জন এসেছিলেন দুবাই থেকে। আমেরিকা ও উপসাগরীয় দেশগুলি থেকেও বেশ কয়েক জন পুণ্যার্থী কালকের ওই বিশেষ পুজোয় অংশ নেন।
পুজো ও অনুষ্ঠান উপলক্ষে তেরি গ্রামে ছিল সাজো সাজো রব। ‘হুজরা’ বা মাথা খোলা বড় বড় ঘরগুলিকে পু্ণ্যার্থীদের আশ্রয় শিবিরে পরিণত করা হয়েছিল। পুণ্যার্থীদের সঙ্গে আসা শিশুরা স্থানীয় ছোট ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলায় মেতে ওঠে।
পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ওয়াঘা সীমান্ত থেকেই উপস্থিত ছিলেন পাক রেঞ্জার্স বাহিনী, গোয়েন্দা ও বিমানবন্দরের সশস্ত্র নিরাপত্তা আধিকারিকেরা। সব মিলিয়ে মোট ৬০০ জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছিল হিন্দু পুণ্যার্থীদের সুরক্ষার জন্য।
গোটা ব্যবস্থাপনায় পাক সরকারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন ‘হিন্দু কমিউনিটি লিগাল অ্যাফেয়ার্স ইন চার্জ’ রোহিত কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘এই প্রার্থনা ও বিশেষ পুজো ভারতকে এক সদর্থক বার্তা দিল। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি প্রচারে পাক সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’’
১৯১৯ সালে তেরি গ্রামে প্রয়াত হন মহারাজ পরমহংসজি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজ়ল নামে এক কট্টরপন্থী সংগঠনের সদস্যেরা মন্দিরটিতে ভাঙচুর চালিয়ে তছনছ করে দেয়। সেই মন্দির পুনরুদ্ধার করে তিন কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে সম্প্রতি তার সংস্কারের কাজ শেষ করে পাক সরকার।