তুরস্কের সংসদে হাতাহাতি। ছবি রয়টার্স।
, ১৭ অগস্ট: শুরুটা হয়েছিল অন্য দিনের মতোই। তবে শুক্রবার (স্থানীয় সময়) শাসক-বিরোধী মতানৈক্যের জেরে কিছুটা চড়া সুরেই শুরু হয়েছিল অধিবেশন। জেলবন্দি এক আইনপ্রণেতার সাংবিধানিক রক্ষাকবচের প্রশ্নে পারদ চড়ছিল। মঞ্চে তখন বক্তব্য রাখছেন এক বিরোধী এমপি। কড়া শব্দে নিশানা
করছেন শাসক শিবিরকে। হঠাৎই ছুটে এলেন শাসক পক্ষের এক সদস্য। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন ওই বিরোধী এমপি-কে। তার পরেই ধুন্ধুমার! মুহূর্তে পার্লামেন্ট হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র। তত ক্ষণে ছুটে এসেছেন দু’পক্ষেরই এমপি-রা। প্রায় আধঘণ্টা চলল নজিরবিহীন মারপিট। মেঝেয় ছড়িয়ে পড়ল রক্ত। সঙ্গে সঙ্গেই মুলতুবি রাখা হয় অধিবেশন। মুহূর্তের মধ্যে তুরস্কের পার্লামেন্টের ওই বেনজির সংঘর্ষের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ল সমাজমাধ্যমে। যা দেখে স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত দু’জন আইনপ্রণেতা।
ঘটনার সূত্রপাত বিরোধী শিবিরের এক এমপি-র সাংবিধানিক রক্ষাকবচ কেড়ে নেওয়াকে কেন্দ্র করে। গত বছর সরকার বিরোধী আন্দোলনের জেরে গ্রেফতার হন আইনজীবী ও সমাজকর্মী ক্যান আটলায়। ১৮ বছরের জেল হয় তাঁর। জেল থেকেই গত বছর হাটায় প্রদেশে ওয়ার্কার্স পার্টি অব তুরস্ক (টিআইপি)-এর টিকিটে ভোটে লড়েন। জিতেও যান। আর তার পরেই তাঁর সাংবিধানিক রক্ষাকবচ ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। সুপ্রিম কোর্ট আটলায়ের কারাদণ্ডের নির্দেশ বহাল রাখার পরে গত জানুয়ারিতে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় তাঁকে। কেড়ে নেওয়া হয় সাংবিধানিক রক্ষাকবচ। কিন্তু গত ১ অগস্ট দেশের সাংবিধানিক আদালত আটলায়কে পদচ্যুত করার নির্দেশ খারিজ করে।
শুক্রবার (স্থানীয় সময়) পার্লামেন্টে আটলায়ের দল ওয়ার্কার্স পার্টি অব তুরস্ক (টিআইপি)-র এমপি আহমেট সিক বক্তব্য রাখছিলেন। সেই সময়েই তাঁকে আঘাত করেন শাসক শিবির জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি)-র আলপাই ওজ়ালান। আটলায়ের প্রতি সরকারের মনোভাবের তীব্র নিন্দা করেছিলেন আহমেট। তিনি বলেছিলেন, “আপনারা আটলায়কে জঙ্গি বলছেন, এতে আশ্চর্য হওয়ার কোনও কারণ নেই। দেশবাসী জানেন সবচেয়ে বড় জঙ্গিরা ((শাসক পক্ষের উদ্দেশে)) ওই বেঞ্চে বসে রয়েছে।” সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে এসে প্রাক্তন ফুটবলার ওজ়ালান আহমেটকে জোরে ধাক্কা দেন। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান ওই এমপি। শুরু হয় বেনজির সংঘর্ষ।
এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেছেন সিএইচপি পার্টির ওজ়গার ওজ়েল। তিনি বলেন, “এমন ঘটনার সাক্ষী থাকায় লজ্জিত বোধ করছি।”