ফাইল চিত্র।
ক্ষমতায় আসার পরেই দেশে কোভিড সংক্রমণের সুনামি বন্ধ করা সরকারের প্রধান কর্মসূচি হিসেবে দেখছে জো বাইডেন প্রশাসন। যার অংশ হিসেবে ফের আমেরিকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, ব্রিটেন, ব্রাজিল, আয়ারল্যান্ড ও ইউরোপের ২৬টি দেশ থেকে আসা পর্যটক, বিশেষত যাঁরা আমেরিকার নাগরিক নন তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে সোমবার। তালিকায় যোগ করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও। এক সরকারি স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় হদিস মেলা আরও বেশি সংক্রামক ও প্রাণঘাতী করোনার নতুন স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে আমেরিকাতেও। এই অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতিকে যাতে আরও খারাপ না হয় তার জন্য এই নিয়ন্ত্রণ।’’
আগামী মাসের মধ্যে আমেরিকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষ ছোঁয়ার আশঙ্কা করছেন বাইডেন। তাঁর মতে, আমেরিকা ‘জরুরি অবস্থা’র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সেই মতো ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু প্রশাসনের প্রস্তাবিত ১ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি ডলারের করোনা-ত্রাণ প্রস্তাবকে রিপাবলিকানদের কেউ কেউ ‘অতিরিক্ত ব্যয়বহুল’ মনে করছেন। বিশেষত, কোভিডের টিকাকরণের জন্য ৯০ হাজার কোটি ডলারের আর্থিক ত্রাণের প্রস্তাব পাশ হওয়ার এক মাসের মাথায়। টিকাকরণ কর্মসূচির জন্য যে আরও অর্থের প্রয়োজন তা স্বীকার করলেও রিপাবলিকান সেনেটর সুজ়ান কলিনসের মতে, ১ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল যথেষ্ট বেশি। আর এক রিপাবলিকান সেনেটর মিট রোমনিও বলেছেন, ‘‘১ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি ডলারের অঙ্কটা ‘ধাক্কা লাগার মত’ এবং তা আমেরিকার অর্থনীতির পক্ষেও ঠিক নয়।’’ তবে তাঁর উপদেষ্টারা বলছেন, ২০২০ সালের শেষে পাশ হওয়া ৯০ হাজার কোটি ডলারের তহবিলে এক থেকে দু’মাসের বেশি কাজ এগোবে না।
ক্ষমতায় বসার প্রথম ১০০ দিনে ১০ কোটি আমেরিকাবাসীর জন্য প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করতে চান বাইডেন। তাঁর চিফ অব স্টাফ রন ক্লেন রবিবার জানান, করোনার প্রতিষেধক সরবরাহের কোনও নির্দিষ্ট রূপরেখাই ছিল না ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা দেশের বহু জায়গাতে একই জিনিস দেখছি। প্রতিষেধক সরবরাহ হলেও প্রয়োগ করা হয়নি। মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া পর্যন্ত প্রক্রিয়াটাই এগোয়নি। এ জন্যই আমদের দেশ পিছিয়ে পড়েছে। এই প্রক্রিয়াকেই দ্রুত করাই বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্য।’’ বাইডেনের করোনা উপদেষ্টা ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক বিবেক মূর্তির বক্তব্য, করোনা বার বার নিজেকে বদলাবে। তাঁর কথায়, ‘‘ভাইরাসটি বলেই দিচ্ছে যে এটির ধরন বদলাতে থাকবে। আমাদের তার জন্য তৈরি থাকতে হবে। কী ভাবে? প্রথমত, নতুন প্রকারের স্ট্রেন শনাক্তকরণে নিয়মিত জেনোমিক সিকোয়েন্সিং করা এবং স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় দ্বিগুণ সচেতন হওয়া।’’