গ্লেন ওকলি।
ওয়ালমার্টে জার্সি কিনতে এসেছিলেন গ্লেন ওকলি। বন্দুকবাজের গুলি থেকে বাঁচতে বাকিদের মতো আত্মরক্ষার চেষ্টা করছিলেন তিনিও। কোনওমতে পার্কিং লটে পৌঁছনোর জন্য দৌড়চ্ছিলেন প্রাণপণে। কিন্তু চোখের সামনে অসংখ্য অসহায় শিশুকে কাঁদতে দেখে স্থির থাকতে পারেননি এই সেনাকর্মী। কোলে-পিঠে করে যত জনকে সম্ভব বার করে নিয়ে আসেন নিরাপদে। টেক্সাস পুলিশ জানাচ্ছে, গ্লেন না-থাকলে শনিবার প্যাট্রিক ক্রুসিয়াসের গুলিতে আরও বেশি সংখ্যক শিশুর মৃত্যু হতে পারত। আর গ্লেন বলছেন, ‘‘আমি শুধু ভাবছিলাম, যদি আমার সন্তান ওখানে থাকত... একই অবস্থায় থাকত... আমি কী চাইতাম? চাইতাম ওদের সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসুন। আমিও সেটাই করেছি।’’
সকাল সাড়ে দশটার ব্যস্ত সময়ে তখন জমজমাট সুপারমার্কেট। গ্লেন জানিয়েছেন, এক খুদে হঠাৎ ছুটে এসে জানায়, বন্দুকবাজ ঢুকে পড়েছে ভিতরে। প্রথমে তার কথায় বিশ্বাস করেনি কেউই। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই গুলির আওয়াজ কানে আসে। প্রাণ বাঁচাতে ছুটে বাইরে বেরিয়ে এসে গ্লেন দেখেন, আতঙ্কে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়চ্ছে বহু শিশু। সঙ্গে বাবা-মা নেই। আর স্থির থাকতে পারেননি ওই যুবক। পরে তিনি বলেছেন, ‘‘ভয়ে ছুটে বেড়াচ্ছিল বাচ্চাগুলো। একা একা। আমি পিঠে-কোলে করে যত জনকে সম্ভব উদ্ধার করে বেরিয়ে আসি। ওরা এত ভয় পেয়ে গিয়েছিল যে, আমার হাত ছাড়িয়ে পড়ে যাচ্ছিল বার বার।’’ টেক্সাসের এল পাসোয় শনিবারের এই হামলায় প্রাণ হারান ২০ জন।
কিছু দিন আগেই আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছিলেন গ্লেন। বলেছেন, ‘‘আমি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাই গুলির আওয়াজ পেয়েই পিস্তলটা বার করে ফেলি। জলদি ভেবে ফেলি কী করতে হবে।’’ গ্লেনকে দেখে এক পুলিশকর্মী হামলাকারী ভেবে ছুটে আসেন। তাঁকে পিস্তলের লাইসেন্স বার করে দেখান ওই যুবক। গ্লেনের এই সাহসিকতার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ধন্য ধন্য করছেন নেটিজেনরা। গ্লেন যদিও জানাচ্ছেন, সেই মুহূর্তে নিজের থেকেও ওই বাচ্চাগুলোর জন্য বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। তাই প্রাণের ঝুঁকি থাকলেও স্থির থাকতে পারেননি।