নাম না করে বাইডেন প্রশাসনের দিকে তির ট্রাম্পের। ছবি— পিটিআই।
আদালতে হাজিরা দিয়ে নিউ ইয়র্ক থেকে ব্যক্তিগত বিমানে ফ্লরিডার মার-আ-লাগোয় ফিরেই আমেরিকার জো বাইডেন প্রশাসনকে তুলোধোনা করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রাপ্তবয়স্কদের ছবির অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েন্সকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করার দায়ে অভিযুক্ত ট্রাম্প বাইডেন প্রশাসনকে সরাসরি নিশানা করতে গিয়ে হাতিয়ার হিসাবে তুলে নিলেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপকে। ফ্লরিডায় নিজের সমর্থকদের বললেন, ‘‘আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি আমেরিকায় এমন কিছু হতে পারে। আমার অপরাধ ছিল শুধু দেশরক্ষায় দৃঢ়তা প্রদর্শন।’’
আমেরিকার প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ফৌজদারি মোকদ্দমার মুখে পড়েছেন তিনি। আদালতে পৌঁছনোর পরেই নিয়ম মেনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তার পরে আঙুলের ছাপ নিয়ে তাঁকে শুনানির জন্য আনা হয় বিচারকের সামনে। ট্রাম্প গ্রেফতার হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু পুলিশ বা জেল হেফাজতে তাঁকে থাকতে হবে না। সেই অনুযায়ী, হাজিরা শেষ হওয়ার পরই ব্যক্তিগত বিমানে ফ্লরিডা ফিরে যান তিনি। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন ক্রিমিনাল কোর্ট হাউসে হাজিরা দিয়ে বেরিয়ে অবশ্য একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি তিনি। কথা ছিল, মার-আ-লাগোয় ফিরে মুখ খুলবেন। ব্যক্তিগত বিমান ফ্লরিডায় প্রবেশ করতেই জল্পনা চড়তে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত সমর্থকদের সামনে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। আর তা করতে গিয়ে বার বার নিশানা করেন আমেরিকার বর্তমান প্রশাসনকে। বলেন, ‘‘দেশ রসাতলে যাচ্ছে।’’
ট্রাম্পের অভিযোগ, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি যাতে কোনও ভাবেই লড়াইয়ে থাকতে না পারেন, সেই ব্যবস্থাই পাকা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এই সমস্ত ভুয়ো মামলা করা হয়েছে কেবলমাত্র ২০২৪ সালের ভোটকে প্রভাবিত করতে। অবিলম্বে সবক’টি মামলা খারিজ করা দরকার।’’ তার পরেই বাইডেন প্রশাসনকে নিশানা করে বলেন, ‘‘যে কোনও মূল্যে আমাকে ভিতরে ঢোকানোর বরাত দেওয়া হয়েছে অতি বামপন্থী বিচারকদের।’’
প্রসঙ্গত, আদালত থেকে ট্রাম্পকে বলা হয়েছিল, এমন কোনও মন্তব্য করা যাবে না যা হিংসায় উস্কানি দেয় বা সমাজে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করে। পর্যবেক্ষকদের একটি অংশের মতে, সে কথা মাথায় রেখেই বাইডেনের নাম নেননি ট্রাম্প। যদিও অন্য একটি অংশের দাবি, ট্রাম্প বাইডেনের নাম নেননি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে।
ঘটনাবলি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে ট্রাম্প ২০২৪-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা দানা বেঁধেছে। একটি অংশের দাবি, ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত কোনও বিষয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার শর্ত হিসাবে নেই। ফলে আইনগত ভাবে ট্রাম্পের তাতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, জনতার সমর্থন তখন তাঁর দিকে থাকবে কি না, তা নিয়ে। সম্ভবত ৪ ডিসেম্বর ট্রাম্প আবার আদালতে হাজিরা দিতে যাবেন।