মেনে নিল ইইউ, বরিসের চুক্তি মানবে কি দেশ

কাল রাত পর্যন্ত ছবিটা কিন্তু অন্য রকম ছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মেনে নিচ্ছে না, ইঙ্গিত ছিল সে রকমই।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪০
Share:

খোশমেজাজে: ব্রাসেলসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এপি

সকাল সাড়ে ১০টায় দু’টো টুইট বদলে দিল ব্রেক্সিট-ছবি।

Advertisement

প্রথম টুইট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। তিনি লিখলেন, ‘‘দারুণ একটা চুক্তি পেয়েছি আমরা। চালকের আসনে এ বার ব্রিটেনই।’’

তার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লদ ইউঙ্কার টুইট করলেন, ‘‘ইচ্ছে যদি থাকে, চুক্তি হবেই।’’

Advertisement

আর এই জোড়া টুইটকেই ‘সাদা ধোঁয়া’ (নতুন পোপ নির্বাচিত হলে ভ্যাটিকান সিটির সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি দিয়ে গলগল করে সাদা ধোঁয়া বেরিয়ে আসে) ধরে নিয়ে হইচই শুরু করে দিল ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রেক্সিট তা হলে হচ্ছেই।

কাল রাত পর্যন্ত ছবিটা কিন্তু অন্য রকম ছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মেনে নিচ্ছে না, ইঙ্গিত ছিল সে রকমই। কিন্তু ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে সারা রাতব্যাপী আলোচনায় বরিস একটা ‘পছন্দসই’ চুক্তি দাঁড় করাতে সক্ষম হন। যে চুক্তিকে ‘ভাল ও ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম’ বলেছেন ইউঙ্কার। তিনি যে এই চুক্তি অনুমোদন করছেন তা-ও সরকারি ভাবে ইউঙ্কার জানিয়ে দেন। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া মসৃণ ও দ্রুত করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি। দু’পক্ষের জন্যই সেটা প্রয়োজন।’’ ইইউয়ের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ের-ও আজ সকালে ব্রাসেলসে এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বলেন, ‘‘ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার একটা নকশা আমরা চূড়ান্ত করে ফেলেছি। ইইউয়ের সঙ্গে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখাও ঠিক করা হয়েছে।’’

আজ থেকে ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট নিয়ে দু’দিনের শীর্ষ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সেই বৈঠক শুরুর কয়েক মিনিট আগে নাটকীয় ভাবে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে রফা হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে দু’পক্ষই। এ বার এই চুক্তি আলাদা আলাদা ভাবে পেশ করা হবে ইইউয়ের এবং ব্রিটেনের পার্লামেন্টে। ইইউ পার্লামেন্ট এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটি করবে আজ ও আগামিকাল। আর পরশু, অর্থাৎ শনিবার, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পেশ করা হবে বরিসের চুক্তি। দুই পার্লামেন্টে চুক্তি পাশ হয়ে গেলে আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় আর কোনও বাধা থাকবে না।

কিন্তু এতই কি মসৃণ হবে ব্রেক্সিট-পথ? ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বারবার চুক্তি পাশ করাতে ব্যর্থ হয়ে সরে যেতে হয়েছিল আগের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-কে। পার্লামেন্টে প্রথম বার তাঁর ব্রেক্সিট চুক্তি পেশ করেই কি তা পাশ করিয়ে নিতে পারবেন বরিস?

আত্মবিশ্বাসী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘‘অঙ্ক কষা হয়ে গিয়েছে। ব্রেক্সিট হচ্ছেই!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement