—প্রতীকী ছবি।
গত বছর থেকে জেনিভায় শুরু হয়েছে দুর্গোৎসব, সৌজন্যে স্থানীয় বঙ্গসমিতি ‘আগমনী’। বছর ঘুরে এখন আবার আকাশে নীলচে ভাব, নরম তুলোর মতো মেঘের মাঝে উঁকি দিচ্ছেন সুয্যিমামা। এখন একটাই আবেগ— ‘মা আসছেন’। বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের দ্বিতীয় বছরের উৎসবের তোড়জোড় পূর্ণরূপে আরম্ভ হয়ে গিয়েছে। জেনিভাবাসী সকল বাঙালি ও বহু অবাঙালির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে মাতৃ-আরাধনার প্রস্তুতির উচ্ছ্বাস। পুজোর প্ল্যানিং, মিটিং, জম্পেশ খাওয়া-দাওয়ার পরিকল্পনা— সব কিছুর সূচনা এই শরৎকালের প্রারম্ভে। পুজোর চার দিন রোজ আয়োজিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সবাই স্কুল-কলেজ-অফিস থেকে ফিরে অংশ নেন রিহার্সালের আড্ডায়। কথায় আছে, ‘পুজো আসছে’ একটি অপরূপ আবেগ। চা-সিঙাড়া সহযোগে সেই অনুভূতি আমরা সকলই উপলব্ধি করি এই সব মহড়ায়। মহালয়ার সমবেত সঙ্গীত থেকে শুরু করে ষষ্ঠীতে বোধনের সময়ের স্তোত্রপাঠ, নবদুর্গা উপস্থাপনা থেকে আগমনী গানে শিশুদের নৃত্য পরিবেশনা, প্রতি মুহূর্তে ব্যস্ত থাকবে আমাদের সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের মঞ্চ।
বিদেশে এসে বাংলা ভাষায় কথা বলে, রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের গানের সহযোগে, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনীর সুরে, যে এই ভাবে দুর্গোৎসব পালন করা যায় তা ছিল আমার কল্পনার অতীত। গত বছর এই আনন্দ ভাগ করে নিয়েছিল শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরিহিত ইউরোপীয় বন্ধুরা। এ বার তারা আরও উৎসাহী। আমরা প্রত্যয়ী, আমাদের এই দুর্গাপুজো সকল অর্থেই সর্বজনীন হয়ে উঠবে।
সুইৎজ়ারল্যান্ডে জেনিভা ছাড়াও লসান, জুরিখ, ভেভেতেও দুর্গাপুজো হয়। প্রতি বছর মা ফেরেন আল্পসের কোলে। দেশ থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে শোনা যায় প্রিয় মেয়ের আগমন-বার্তা— ‘‘জাগো বিস্ময়, জাগো স্পন্দন, জাগো জাগো উমা।’’