—প্রতীকী ছবি।
ক’দিন ধরেই আবহাওয়ায় বসন্তের উষ্ণ আভাস। রাস্তার দু’ধারে ফুটে থাকা টইটই ফুলের গাছ দেখে কাশবনের কথা মনে পড়ছিল।
সাত বছর আগে হ্যামিল্টনে দুর্গোৎসব করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন উৎসাহী তরুণ-তরুণীরা। উত্তর পলমেস্টন থেকে প্রতিমা আনা হয়েছিল। সকলের উদ্যোগে ২০১৬ সালে এখানে প্রথম দুর্গোৎসব হয়।
অতিমারির সময়ে নিউ জ়িল্যান্ডে কয়েক জায়গায় সংক্ষিপ্ত ভাবে দুর্গাপুজো হলেও সে ভাবে উৎসব কোথাও হয়নি। হ্যামিল্টনে একটি বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়েছিল। আমরা জ়ুমে মায়ের দর্শন আর আরতি দেখেছিলাম। ২০২২-এর সেপ্টেম্বর থেকে নিউ জ়িল্যান্ডে কোভিড-১৯-এর সতর্কতার নিয়মকানুন তুলে নেওয়া হয়। সেই বছর কুমোরটুলি থেকে নতুন প্রতিমা, দক্ষিণা কালী আর কলকাতা থেকে ঢাক আনা হয়েছিল।
এই বছর অগস্ট থেকে পুজোর কমিটিগুলিতে কাজকর্ম নিয়ে আলাপ-আলোচনা আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল। এ বার কমিউনিটি হলে পুজো হচ্ছে। পৌরোহিত্য করবেন স্থানীয় এক অধ্যাপক দাদা। স্থানীয় ডেয়ারি ফার্মের অধিকর্তা সহযোগী পুরোহিত হবেন। তা ছাড়া, উনি প্রতিবারের মতো সুস্বাদু পায়েসও তৈরি করে আনবেন।
গত কয়েক বছর ঢাকের বাজনা সিডিতে বাজানো হত। এ বার আর তা হবে না, কারণ আমারা ঢাকও কিনে রেখেছি। এখানে অনেকেই ঢাক বাজানোয় পারদর্শী। আমাদের পুজো সপ্তাহান্তে। তাই বোধন থেকে বিসর্জন, সবটাই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেরে ফেলতে হবে।
শুক্রবার আর শনিবার নিরামিষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যারতির পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। দু’দিন নিরামিষ ভোজনের পরে সবাই রবিবারের মাংস ভোজের অপেক্ষায় থাকেন। মাংস রান্নার প্রস্তুতি দু’দিন আগে থেকেই আরম্ভ হয়ে যায়। প্রতিবার আমার বাড়ির উঠোনেই মাংস রান্না হয়। এটা আমার জন্য অত্যন্ত নস্ট্যালজিক একটি ঘটনা। ছেলেবেলায় আমাদের পাড়ায় দুর্গাপুজোর সময়ে ঠিক এ ভাবেই সবাই মিলে রান্না করা হত।
রবিবার দর্পণ বিসর্জন, বরণ ও সিঁদুর খেলা। প্রতিমা নিরঞ্জনের উপায় নেই এখানে। তাই সব কিছু আবার স্টোরেজেই নিয়ে যাওয়া হবে। তখন অল্পবিস্তর বিষণ্ণতা অনুভব করলেও তা বেশি ক্ষণ থাকে না। গরম মাংসের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে সবার মেজাজ পুনরুজ্জীবিত হয়ে যায়।