Bangladesh Protest

ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে উদ্যোগী নয়াদিল্লি

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন স্থলবন্দরের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন ৭৭৮ জন ভারতীয় ছাত্রছাত্রী। পাশাপাশি ২০০ জন ফিরেছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ভারতগামী নিয়মিত উড়ানে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৪ ০৫:১৬
Share:

উত্তপ্ত বাংলাদেশ। —ফাইল চিত্র।

ছাত্র বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত সরকার। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে বিমান মন্ত্রক, অভিবাসন দফতর, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিএসএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন স্থলবন্দরের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন ৭৭৮ জন ভারতীয় ছাত্রছাত্রী। পাশাপাশি ২০০ জন ফিরেছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ভারতগামী নিয়মিত উড়ানে। এখনও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪ হাজার ভারতীয় ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, নেপাল ও ভুটানের অনুরোধে ওই দেশগুলি থেকে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদেরও ভারতে আসতে সাহায্য করা হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে ফেরা এক ভারতীয় ছাত্রের কথায়, ‘‘আমরা অনেকেই ফেরার জন্য বিমানের টিকিট বুক করেছিলাম। কিন্তু কার্ফু বলবৎ থাকায় অনেকেই বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারছে না। বাতিল হয়েছে অনেক উড়ানও। এখনও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের পরিবেশ শান্তিপূর্ণই রয়েছে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অনেক ভারতীয় ছাত্রছাত্রী রয়েছে।’’ ভারতীয়দের ফেরাতে বাংলাদেশের বিমান মন্ত্রক ও বিভিন্ন উড়ান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে দিল্লি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ঢাকা ও চট্টগ্রাম
থেকে নিয়মিত উড়ান চলাচল চালু রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Advertisement

এ দিন দুপুরে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের নাজিমনুর হাসান মালদহের মাহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র দিয়ে ভারতে ফেরেন। তিনি বলেন, ‘‘এ পারের মাটিতে পা দিয়ে স্বস্তি হচ্ছে। এ বছরই আমার মেডিক্যাল কোর্সের শেষ বছর। বাংলাদেশে অশান্তির কারণে দেশে ফিরে আসতে হল। জানি না, ফের ওপারে গিয়ে পড়া শেষ করতে পারব কি না!’’ গত দু’দিন ধরে মাহদিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৫০-৩০০ জন এ পারে এসছেন বলে খবর।

কোচবিহার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী আটকে রয়েছেন রংপুর মেডিক্যাল কলেজে। যাঁদের মধ্যে অনেক ভারতীয় ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। এই অবস্থায় চব্বিশ ঘণ্টা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খোলা রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এ দিনই কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফেরেন অসমের নলহাটির বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান। তাঁর সঙ্গে আরও ১২ জন ছাত্রছাত্রী ছিলেন, যাঁদের অনেকেই নেপালের বাসিন্দা। প্রত্যেকেই ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রী। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে সাধারণত রাতে যাতায়াত বন্ধ থাকে। কিন্তু এখন বাংলাদেশ থেকে হিলি সীমান্ত দিয়ে ফেরা পড়ুয়াদের জন্য সারারাত অভিবাসন দফতর খুলে রাখা হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে খবর। ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১০ দশ জন পড়ুয়া ভারতে ফিরেছেন। তাঁদের বাড়ি নেপালে।

অন্য দিকে আগরতলা-আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে এখনও পর্যন্ত ৭৩ জন ভারতীয় ছাত্রছাত্রী ভারতে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৬ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ঘাটুরা মেডিক্যাল কলেজের। অসমের করিমগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ৪১ জন ছাত্রছাত্রী দেশে ফিরেছেন৷

বাংলাদেশে সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনে শামিল ছাত্রদের উপরে গুলি চালানো ও ছাত্রমৃত্যুর প্রতিবাদে আজ বিকেলে বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনের সামনে থেকে মৌনী মিছিল করলেন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। মিছিলটি উপাসনাগৃহের সামনে শেষ হয়। সেখানে মোমবাতি হাতে নিয়ে নিহত ছাত্রদের স্মৃতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। গুজরাতের মহারাজা সয়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভ দেখান বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement