—প্রতীকী চিত্র।
বিভিন্ন দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির জেরে আমেরিকায় ক্রমশ বাড়ছে চুরির সংখ্যা। বিশেষত বিভিন্ন দোকান, শপিং মলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেমালুম গায়েব হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় টুথপেস্ট, চকলেট, ওয়াশিং পাউডার কাচ দিয়ে ঘিরে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
বড় বাণিজ্যিক শাখা ওয়ালমার্ট, টার্গেটের পাশাপাশি ওষুধ বিক্রেতা সংস্থা সিভিএস, ওয়ালগ্রিনস এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া গৃহসজ্জা ও জুতোর সংস্থাগুলিও বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। অনেক ক্ষেত্রে নিছক চুরির বাইরে হিংসাত্মক ঘটনাও দেখা গিয়েছে।
ডিক’স স্পোর্টিং গুডস সংস্থার চিফ এগ্জ়িকিউটিভ লরেন হোবার্ট জানিয়েছেন, খুচরো বিক্রেতা সংস্থায় চুরি নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই প্রবণতা উত্তরোত্তর বেড়ে চলায় বহু সংস্থাই বিপাকে। এর প্রভাব পড়ছে ব্যবসাতেও। ডিক’স-এর আর্থিক বৃদ্ধিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এর প্রভাবে।
টার্গেট-এর চিফ এগ্জ়িকিউটিভ ব্রায়ান কর্নেল জানিয়েছেন, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে তাঁদের সংস্থায় চুরির পরিমাণ বেড়েছে ১২০ শতাংশ। তার প্রভাব পড়েছে ব্যবসাতেও।
অর্থনীতিবিদেরা জানাচ্ছেন, গত ১৮ মাসে সুদের হার প্রায় শূন্য থেকে বেড়ে সাড়ে পাঁচ শতাংশে পৌঁছেছে। যা গত ২২ বছরে সর্বোচ্চ। নীতি নির্ধারকেরা মূল্যবৃদ্ধির হার কমানোর জন্য সওয়াল করছেন। এই পরিস্থিতিতে সঙ্কটে ক্রেতারা। তার প্রভাবেই অনেকে চুরি-ছিনতাইয়ের রাস্তা বেছে নিচ্ছেন বলে মনে করছেন অনেকে।
ন্যাশনাল রিটেল ফেডারেশনের ২০২২ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রশাসনিক ভুল কিংবা চুরির জেরে ২০২১ সালের তুলনায় খুচরো ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৯ কোটি ডলার। এই সময়ে শপিং মল বা স্টোরগুলিতে সংগঠিত চুরি বেড়েছে ২৬.৫ শতাংশ। পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলেছে অতিমারি।
এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিভিন্ন শপিং মল কিংবা দোকানে কাঁচের দেওয়ালের ভিতরে রাখতে হচ্ছে বিভিন্ন দ্রব্য। রাখা হয়েছে ‘কল বাটন’-এর ব্যবস্থাও। এ ক্ষেত্রে কেউ হাত দিলেই বেজে উঠবে অ্যালার্ম। তবে এ সমস্ত ব্যবস্থাও সব ক্ষেত্রে যে কার্যকরী হচ্ছে, তা নয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, গত জুনে মাস্ক ও জ্যাকেট পরিহিত এক ব্যক্তি ‘ব্লোটর্চ’ ব্যবহার করে নিউ ইয়র্কে ওয়ালগ্রিনসের একটি আউটলেটে কাঁচের দেওয়াল ভেদ করে বহু জিনিসপত্র ব্যাগে ভরে নিয়েছিলেন। আর এক সংস্থা সিভিএস-এর বহু আউটলেট চত্বরে নিরাপত্তার অভাব অনুভূত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়েরা।
পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় যে, কোথাও কোথাও দোকান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সংস্থাগুলি। চুরির জন্য ২০২১ সালে সান ফ্রান্সিসকোয় পাঁচটি স্টোর বন্ধ করে দিয়েছে। চলতি বছরে শিকাগোয় চারটি আউটলেট বন্ধ করেছে ওয়ালমার্ট। গত ১২ অগস্ট লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি স্টোরে মাস্ক পরিহিত ৩০ জনের একটি দল তিন লক্ষ ডলারের নানা দ্রব্য চুরি করে বলে অভিযোগ। বেরোনোর সময়ে বাধা দিলে নিরাপত্তারক্ষীদের উপরেও তারা চড়াও হয়।