১৯ বছরের আগের খুনের ঘটনায় পুদুচেরী থেকে গ্রেফতার দুই প্রাক্তন সেনা জওয়ান। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পর পর তিনটি খুন করে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তাঁরা। নাম এবং পরিচয় বদলে ১৯ বছর ধরে পুলিশের চোখ এড়িয়েছেন। অবশেষে ধরা পড়ে গেলেন প্রাক্তন দুই সেনা জওয়ান। কেরলের কোল্লাম জেলায় মা এবং দুই যমজ সন্তানকে খুনের অভিযোগে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের।
ধৃতেরা হলেন দিবিল কুমার বি এবং রাজেশ পি। পঞ্জাবের পঠানকোটে ভারতীয় সেনার ৪৫ এডি রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন তাঁরা। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কোল্লামের একটি ভাড়াবাড়ি থেকে ২৪ বছর বয়সি মহিলা এবং তাঁর দুই যমজ সন্তানের দেহ উদ্ধার করা হয়। মায়ের সঙ্গে ১৭ দিন বয়সি ওই সন্তানদের খুনের অভিযোগ ওঠে দিবিল এবং রাজেশের বিরুদ্ধে। ঘটনার পরেই সেনাবাহিনী ছেড়েছিলেন তাঁরা। তদন্তকারীদের অভিযোগ, নাম এবং পরিচয় বদলে পুদুচেরীতে চলে গিয়েছিলেন দুই অভিযুক্ত। সেখানে নতুন করে সংসারও পাতেন। নতুন নামের পরিচয়পত্রও তৈরি করেন তাঁরা। ১৯ বছর পর তাঁদের খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কোল্লামের বাসিন্দা রঞ্জিনীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন দিবিল। তখন তাঁর বয়স ছিল ২৮ বছর। সম্পর্কে থাকাকালীন মহিলা সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন এবং যমজ কন্যার জন্ম দেন। এর পরেই তাঁর সঙ্গে অভিযুক্ত দূরত্ব বৃদ্ধি করেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হন রঞ্জিনী। সন্তানের বাবা কে, তা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে শারীরিক পরীক্ষার পরামর্শ দেয় কমিশন। এর পরেই ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে রঞ্জিনীকে খুনের ছক কষেন দিবিল। সাহায্য নেন সহকর্মী তথা বন্ধু রাজেশের।
২০০৬ সালের মার্চ মাসেই এই দু’জনকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে দেয় ভারতীয় সেনা। চার বছর পুলিশের তদন্তের পর এই খুনের ঘটনার তদন্তভার নেয় সিবিআই। দুই অভিযুক্তকে ধরিয়ে দিতে পারলে দু’লক্ষ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্তদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি ওই দু’জন সম্পর্কে গোপন সূত্রে খবর পায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার চেন্নাই শাখার আধিকারিকেরা পুদুচেরী থেকে তাঁদের গ্রেফতার করেন। শনিবার কোচির আদালতে হাজির করানো হয় তাঁদের। ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।