George Floyd

জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারকে ১৯৬ কোটি

আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ইতিহাসে কোনও অপমৃত্যুর ক্ষেত্রে এত বড় অঙ্কের প্রাক্-বিচার ক্ষতিপূরণ এই প্রথম।

Advertisement
মিনিয়াপোলিস শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২১ ০৬:৩২
Share:

মোট ২ কোটি ৭০ লক্ষ ডলার। টাকার অঙ্কে ১৯৬ কোটি। আমেরিকায় পুলিশের হাতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারকে এই রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করছে মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিল। যে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ফ্লয়েডের গলায় হাঁটু চেপে ধরার ফলে শ্বাসনালি ভেঙে ফ্লয়েড মারা যান বলে অভিযোগ, সেই ডেরেক শভিন অবশ্য রেহাই পাচ্ছেন না। তাঁর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুনের চার্জ গঠন হচ্ছে।

Advertisement

আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ইতিহাসে কোনও অপমৃত্যুর ক্ষেত্রে এত বড় অঙ্কের প্রাক্-বিচার ক্ষতিপূরণ এই প্রথম। গত বছরের ২৫ মে জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগে পুলিশ ধরেছিল ফ্লয়েডকে। পুলিশ অফিসার শভিন রাস্তায় চেপে ধরে ফ্লয়েডের গলায় হাঁটু তুলে দিয়েছিলেন। ফ্লয়েড তখন বলছিলেন, ‘‘আই কান্ট ব্রিদ।’’ শ্বাসনালি ভেঙে মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুর জেরে আমেরিকার গণ্ডি পেরিয়ে অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতিবাদ। ফ্লয়েডের শেষ কথাগুলো হয়ে ওঠে প্রতিবাদীদের স্লোগান। শভিন এবং অন্য তিন পুলিশ অফিসারের চাকরি যায়। তাঁরা প্রত্যেকেই এই মামলায় অভিযুক্ত।

গত বছরের জুলাইয়ে মিনিয়াপোলিস শহর কর্তৃপক্ষ এবং অভিযুক্ত চার অফিসারের বিরুদ্ধে নাগরিক অধিকার আইনে মামলা করেছিল ফ্লয়েডের পরিবার। তাঁদের বক্তব্য ছিল, গ্রেফতারির সময়ে ফ্লয়েডের নাগরিক অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, শহর কর্তৃপক্ষ পুলিশ বাহিনীর মধ্যে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও জাতিবিদ্বেষের সংস্কৃতি গড়ে উঠতে দিয়েছেন বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। সেই মামলাতেই এই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে এলাকা থেকে ফ্লয়েডকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, ক্ষতিপূরণ হিসেবে সেখানকার উন্নতিকল্পে ৫ লক্ষ ডলার দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ফ্লয়েড পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেছেন, ‘‘এই বৃহত্তম ক্ষতিপূরণের ফলে সর্বত্র জোরালো বার্তা যাবে যে, কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনের সত্যিই মূল্য আছে (‘ব্ল্যাক লাইভস ডু ম্যাটার’)। অশ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে পুলিশি নির্যাতন যে শেষ হওয়া অবশ্য প্রয়োজন, সেই কথাটিও গুরুত্ব পাবে।’’ নিহত যুবকের ভাই রডনির কথায়, ‘‘জর্জ আশা রাখত, সব কিছু আরও ভাল হবে। যারা ওকে ভালবাসত, তাদের কাছে সেটাই ওর উত্তরাধিকার। এই আইনি বোঝাপড়ার ফলে সেই পথেই এগোনো যাবে বলে মনে করি।’’

Advertisement

প্রাক্তন পুলিশ অফিসার শভিনের বিরুদ্ধে এখন ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ খুনের চার্জ ঝুলছে। তার ফলে দোষী সাব্যস্ত হলে চল্লিশ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে তাঁর। এ ক্ষেত্রে অভিযোগটা অনিচ্ছাকৃত খুনের। আবার অন্যের জীবনের তোয়াক্কা না-করে কেউ কোনও বিপজ্জনক অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ দায়ের হলে ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুনের চার্জ গঠন হয়। তখন সাজা হতে পারে ২৫ বছরের। আপিল আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে শভিনের বিরুদ্ধে এই ধারাতেও চার্জ গঠন হওয়ায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার একটি অতিরিক্ত অস্ত্র রইল আইনজীবীদের হাতে। জুরি নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। শুনানি শুরু হওয়ার কথা ২৯ মার্চ। সংবাদ সংস্থা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement