ফাইল চিত্র।
আমেরিকার অন্যতম প্রধান সরকারি কার্যালয় তথা আমেরিকান কংগ্রেসের সদর দফতর ক্যাপিটল হিলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছিল, তা আকস্মিক কিছু নয়। সে দিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্ররোচনায় সুপরিকল্পিত ভাবে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন তাঁর সমর্থকেরা। বৃহস্পতিবার সন্ধেয়, ক্যাপিটল-মামলায় শুনানির প্রথম দিনে জানাল তদন্তকারী কমিটি।
ক্যাপিটলে হামলার পর প্রায় দেড় বছর ধরে তদন্ত চলেছে। গত কাল ছিল ছ’পর্বের শুনানির প্রথম দিন। তদন্তকারী কমিটির রিপাবলিকান ভাইস চেয়ারওম্যান লিজ় চেনি বলেন, ‘‘ট্রাম্প জনতাকে ক্যাপিটল আক্রমণের নির্দেশ দিয়ে আগুনে ঘি ঢেলেছিলেন।’’ হাউস কমিটির চেয়ারম্যান তথা কমিটির ডেমোক্র্যাট প্রধান বেনি থম্পসন ট্রাম্পকেই মূল ষড়যন্ত্রকারী ঠাউরেছেন। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে এ দিন একাধিক অদেখা ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করেছে কমিটি। তার কোনওটায় হামলার দিনে উত্তেজিত জনতার গতিবিধি দেখা গিয়েছে। কোনওটায় দেখা যাচ্ছে, মাইকে ট্রাম্পের সমালোচনা-মূলক টুইট পড়ে শুনিয়ে মানুষকে উত্তেজিত করছেন এক ট্রাম্প অনুগামী।
কমিটির সামনে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে কারচুপির অভিযোগ ট্রাম্প করেছিলেন তা ভিত্তিহীন। শুনানিতে ট্রাম্প কন্যা ইভাঙ্কা-সহ বেশ কয়েক জন ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠের সাক্ষ্যও দেখানো হয়েছে। সকলেই ট্রাম্পের হেরে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছিলেন।
যদিও ট্রাম্প পুরো বিষয়টা তিনি ‘রাজনৈতিক ভাঁওতাবাজি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে এ নিয়ে গোটা দিন তিনি যে বেশ অস্বস্তিতে ছিলেন তা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দেখে অনুমান করা যায়। সেখানে তিনি ওই হামলার ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক আন্দোলন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ট্রাম্প-বিরোধীদের মতে, ২০২১ -এর ৬ জানুয়ারি আমেরিকার ইতিহাসে এক লজ্জাজনক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। সে দিন ক্যাপিটলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের আনুষ্ঠানিক জয় ঘোষণার কথা ছিল। ট্রাম্প যদিও ফল প্রকাশের পর থেকেই কারচুপির অভিযোগ তুলছিলেন। তদন্তকারীদের মতে, নির্বাচনের ফল ঘোরাতে সে দিন শেষ কামড় দিয়েছিলেন মরিয়া ট্রাম্প। রিপাবলিকান সমর্থকদের উস্কে দিয়ে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা ছিল। সেই উদ্দেশে বেশ কিছু দিন ধরে ভুয়ো নির্বাচনের জিগির তুলে মানুষের মগজ ধোলাই করা হচ্ছিল। শুনানিতে সে দিনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে থম্পসন বলেন, ‘‘জনমত পাল্টে দেওয়ার সেই ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনও শেষ হয়নি।’’ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই শুনানিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন রিপাবলিকানদের একাংশ। এর পরের শুনানি সোমবার।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।