ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরে উত্তেজনা কমাতে নয়াদিল্লি কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, আগামী ২৬ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে তা জানতে চাইবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসনের এক পদস্থ অফিসার এই কথা জানিয়েছেন। ট্রাম্প আগেই বলেছেন, ফ্রান্সে আসন্ন জি-৭ সম্মেলনে মোদীর সঙ্গে পার্শ্ববৈঠকে কাশ্মীর নিয়ে কথা বলবেন তিনি। ওই অফিসারের কথায়, ‘‘কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পাশাপাশি উপত্যকায় মানবাধিকার রক্ষার জন্য ভারত সরকারে কী ভাবে সচেষ্ট, সেটাও জানতে চাওয়া হবে বৈঠকে।’’
গত দু’সপ্তাহে তিন বার কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব-দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোদীর বৈঠক শেষ পর্যন্ত কোন পথে এগোবে, তা আঁচ করতে পারছেন না কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। তবে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বৈঠকের গুরুত্ব যথেষ্ট। ওই মার্কিন কর্তার আরও বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তানকে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পাক মাটি থেকে যে জঙ্গি সংগঠনগুলি বারবার ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতা চালিয়েছে, তাদের কার্যকলাপ বন্ধ করতেও বলা হয়েছে।’’
সাউথ ব্লক বুঝতে পারছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তা আদৌ সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন স্বতন্ত্র। কিন্তু দু’টি দেশকেই নিজেদের সঙ্গে রাখাটা এই মুহূর্তে মার্কিন নীতির বাধ্যবাধকতা।
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের ফলে কাশ্মীরের ভূ-কৌশলগত পরিস্থিতি কিছুটা হলেও পাল্টেছে। পাকিস্তানের পাখির চোখ এখন কাশ্মীর। ইমরান সরকার জানিয়েই দিয়েছে, কাশ্মীরের ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি’র ফলে আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়টি লঘু বা প্রভাবিত হতে পারে। কিন্তু ট্রাম্প অক্টোবরেই আফগানিস্তান থেকে সেনা তুলতে চান। সে ক্ষেত্রে ইসলামাবাদের পূর্ণ সহযোগিতা তাঁর প্রয়োজন। তাই যে ভাবে হোক, কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তানকে সংযত রাখতে চাইছেন তিনি। বস্তুত, কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জে সরব হতে শুরু করেছে পাকিস্তান। তাই কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানকে কিছুটা খুশি রাখা যাবে— এই হিসেবও ভাবনায় রাখছে হোয়াইট হাউস। আবার ভারতের বিশাল বাজারকে আমেরিকা কখনওই অবজ্ঞা করতে পারে না। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের আধিপত্য কিছুটা হলেও খর্ব করতে ভারতের পাশে থাকতে হবে ট্রাম্পকে।