খনিজে সমৃদ্ধ গ্রিনল্যান্ডের ‘দখল’ চাইছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর গ্রিনল্যান্ডের উপর আমেরিকার দখল নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আধা স্বশাসিত দ্বীপটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যে থাকলেও, এটি আমেরিকার অংশ নয়। ইউরোপের ডেনমার্কের একটি অংশ এটি। ট্রাম্পের বক্তব্য, বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার হাতে থাকা অত্যন্ত জরুরি। কূটনীতিকেরা মনে করছেন, এই দ্বীপের দখল পেলে আমেরিকার অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে। কারণ এই দ্বীপটিতে লুকিয়ে রয়েছে খনিজ সম্পদের বিপুল ভান্ডার।
সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’র এক প্রতিবেদন অনুসারে, গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদের বেশির ভাগই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রিনল্যান্ডের প্রতি বিভিন্ন দেশের আগ্রহের অন্যতম কারণ হল এখানকার খনিজ সম্পদ। তিনি জানান, আগামী কয়েক দশকে উন্নত দেশগুলিতে যে পরিমাণ খনিজ সম্পদের প্রয়োজন হবে, তা একাই জোগান দিতে পারবে এই দ্বীপ। রয়েছে অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়। অনেকগুলিই দুর্গম। পাহাড়গুলিতে প্রচুর পরিমাণে সোনা সঞ্চিত রয়েছে। এ ছাড়া তামা, নিকেল এবং অন্য ধাতুর আকরিকও রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা সেখানে সোনা এবং অন্য বিরল মূল্যবান ধাতুর খোঁজ চালাচ্ছে।
তবে এই দ্বীপের অধিকাংশ অঞ্চলেই খনিজ সম্পদের খোঁজ এখনও শুরু হয়নি। আধা স্বশাসিত এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অংশ হলেও, খনিজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদগুলির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন গ্রিনল্যান্ড কর্তৃপক্ষই। ‘বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুসারে, বিরল খনিজ ধাতুর সম্ভারের দিক থেকে এই দ্বীপটি বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে। মোবাইল, ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক মোটর তৈরির কাজে এগুলি ব্যবহার হয়। লিথিয়াম, কোবাল্ট প্রচুর পরিমাণে মজুত রয়েছে এখানে। এ ছাড়া খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সম্ভারও রয়েছে। তবে নতুন করে কোনও খনন বর্তমানে নিষিদ্ধ রয়েছে গ্রিনল্যান্ডে। দ্বীপ সংলগ্ন গভীর সমুদ্রেও খনন নিষিদ্ধ। গোটা গ্রিনল্যান্ডে বর্তমানে মাত্র দু’টি সক্রিয় খনি রয়েছে।
‘বিবিসি’-র প্রতিবেদন অনুসারে, গ্রিনল্যান্ডে আপাতত একশোটি সংস্থাকে খনিজ সম্পদ খোঁজার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিদেশি সংস্থাগুলির মধ্যে বেশির ভাগই ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার। আমেরিকার রয়েছে মাত্র একটি সংস্থা। রয়টার্সের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুসারে, এক খনি সংস্থাকে আমেরিকা অনুরোধ করেছে তাদের উত্তোলন করা ধাতু চিনকে বিক্রি না-করার জন্য।