ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথি চুরি করার অভিযোগ উঠেছে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তবে তাতে দমতে রাজি নন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার অভিযোগ তুলে এ বার দেশের বিচারব্যবস্থাকেই দুর্নীতিগ্রস্ত বলে তোপ দাগলেন ট্রাম্প। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য থেকে বাদ যাননি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ, বিচারব্যবস্থাকে হাতিয়ার করে তাঁকে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
শনিবার আমেরিকার জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনা প্রদেশে রিপাবলিকানদের জনসভায় বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। জনসভা থেকে বিচারব্যবস্থা এবং বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হচ্ছে। যে ভাবে দেশের বিচারব্যবস্থাকে আমার বিরুদ্ধে হাতিয়ার করা হচ্ছে, তা দেশের ইতিহাসে ক্ষমতার অপব্যবহারের চূড়ান্ত নজির।” সমর্থকদের একজোট থাকার বার্তা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আপনাদের মাথায় রাখতে হবে যে, আপনারা কিছু পাগলের সঙ্গে লড়াই করছেন।”
কেন তাঁকে তথ্য চুরির মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে, তারও কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ট্রাম্প। তাঁর মতে, ২০২৪-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে। তাঁর জনপ্রিয়তা বাইডেনের তুলনায় ছাপিয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। দেশের গোপন তথ্য চুরির দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পর রিপাবলিকান দলের সতীর্থদেরও পাশে পেয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে ‘অম্লমধুর’ সম্পর্ক থাকা রিপাবলিকান নেতা তথা হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টিটিভসের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থিও প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে ৩৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে ৩১টির মূল বিষয়ই হল, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপন নথি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন তিনি।’ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশের তথ্য চুরির অভিযোগ এনেছিলেন যে আইনজীবী, তিনি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “দেশের গোপন তথ্য সঠিক ভাবে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য আইন আছে। আশা করব সেগুলো প্রয়োগ করা হবে।” একই সঙ্গে তিনি আশা করেছেন, ট্রাম্পের বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।
এই মামলায় উঠে এসেছে তাঁর সহকারী ওয়াল্ট নওটার প্রসঙ্গও। অভিযোগ, ফ্লরিডার বাড়ির অন্তত ৬টি জায়গায় এই সব গোপন নথি লুকিয়ে রাখতে ট্রাম্পকে সাহায্য করেছেন তিনি। এমনকি শৌচাগারেও নাকি সেই সব নথি লুকিয়ে রাখা হয়েছে। মাঝেমধ্যেই নিজের বাড়িতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে অতিথি-অভ্যাগতেরা আসেন। সে ক্ষেত্রে দেশের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে জো বাইডেন প্রশাসন। এই মামলার শুনানিতে আগামী মঙ্গলবার মায়ামির আদালতে উপস্থিত হতে পারেন ট্রাম্প। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর সর্বোচ্চ ২০ বছরের সাজা হতে পারে।