ফাইল চিত্র।
সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াতে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে আপত্তি এত জোরদার হয়েছে যে চাপের মুখে কিছুটা হলেও পিছু হটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, পরিবার থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন হওয়া রুখতে দ্রুত প্রশাসনিক নির্দেশ দিতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট।
১৯৯৭-র মার্কিন এক আইন অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসনের অভিযোগে (বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকলেও) শিশুদের ২০ দিনের বেশি আটকে রাখা যাবে না। ট্রাম্পের জ়িরো টলারেন্স নীতি সেই আইনও মানেনি। এ বার নতুন নির্দেশ জারি করলেও জ়িরো টলারেন্স নীতি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এই ‘অমানবিক’ নীতির বিরুদ্ধে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার মতোই মুখ খুলেছেন ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কাও। এই সঙ্কটে দ্রুত ইতি টানতে বলেছেন তিনি, মার্কিন সংবাদমাধ্যমে তেমনই দাবি। সরব ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এবং পোপ ফ্রান্সিস। চুপ বসে নেই তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়াও। সিইও সত্য নডেলার সঙ্গে মাইক্রোসফ্টের একশো কর্মী মার্কিন সীমান্ত নজরদারি সংস্থার (বর্ডার পেট্রল) সঙ্গে কাজ করবেন না বলে সই করেছেন চিঠিতে। শরণার্থী শিশুকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার নীতি কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়— এ কথা লিখে মাইক্রোসফ্ট-এর কর্মীরা জানান, অনৈতিক কাজে তাঁরা থাকতে চান না। নডেলাও ব্লগে লিখেছেন, ‘‘এই ঘৃণ্য নীতির প্রয়োগে আমি ব্যথিত। একজন বাবা এবং অভিবাসী হিসেবে ব্যক্তিগত স্তরে বিষয়টি ছুঁয়েছে আমায়। এই নীতি নিষ্ঠুর, আপত্তিকর। পরিবর্তন চাই। তাই স্পষ্ট জানাচ্ছি— সীমান্তে শরণার্থী শিশুকে তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে মার্কিন সরকারের যে প্রকল্প রয়েছে, তাতে কাজ করবে না মাইক্রোসফ্ট।’’
এই নীতির বিরুদ্ধে সরব গুগলের সিইও এবং আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুন্দর পিচাইও। তিনি টুইট করেছেন, ‘‘সীমান্তে পরিবারগুলোর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ছবি এবং খবর দেখে বিপর্যস্ত লাগছে। সরকারকে অনুরোধ, আরও মানবিক ও উন্নততর সমাধান খুঁজে বার করা হোক।’’ অ্যাপল কর্ণধার টিম কুক বলেছেন, ‘‘ছবিগুলো মর্মান্তিক। বাচ্চারা সব চেয়ে স্পর্শকাতর। যা হচ্ছে, সেটা অমানবিক। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’’ ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জ়াকারবার্গের মন্তব্য, ‘‘এই মুহূর্তে এই নীতি বন্ধ করা উচিত।’’ আপত্তি জানিয়ে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘‘বাচ্চাদের বাবা-মায়ের থেকে আলাদা করে দেওয়া অনৈতিক। সস্তা জনপ্রিয়তা এর সমাধান নয়।’’ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরব টেরেসা মে-ও। তাঁর মুখপাত্র বলেন, ‘‘ব্রিটিশ অভিবাসন নীতি কখনওই শরণার্থী শিশুকে পরিবার থেকে আলাদা করে না।’’