অস্ত্রোপচারের সময় ভুল করে তোয়ালে রয়ে যায় প্রসূতির পেটে। — প্রতীকী ছবি।
সন্তানের জন্ম দিতে বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিলেন বছর পঁচিশের মুক্তা। নির্ধারিত সময়েই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু প্রসবের পরেও পেটব্যথা কমে না। ব্যথা নিয়েই ক্লিনিক থেকে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু ব্যথা কমে না কেন? অনেক পরীক্ষার পর ধরা পড়ল মুক্তার পেটে রয়ে গিয়েছে আস্ত একটি তোয়ালে। যা অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকেরা ব্যবহার করেন হাত মুছতে!
বাংলাদেশের দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার একটি ক্লিনিকে গত ৩০ নভেম্বর মুক্তা পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। সাত দিনের মাথায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সদ্যোজাতকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন মুক্তা। পেটে অসহ্য ব্যথা। স্বামী যোগাযোগ করেন সেই ক্লিনিকে। সেখান থেকে মুক্তাকে বেশ কিছু ওষুধও দেওয়া হয়। কিন্তু ওষুধ খেয়েও ব্যথা কমে না।
গত ২৩ ডিসেম্বর অসহ্য পেটের যন্ত্রণা নিয়ে দিনাজপুরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন মুক্তা। পর দিন তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। পেট থেকে বেরোয় একটি তোয়ালে। ২৮ ডিসেম্বর তাঁকে সরকারি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে মা ও শিশু, দু’জনেই ভাল আছেন বলে জানানো হয়েছে।
ওই প্রসূতির অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক রবিউল আলম বলেন, ‘‘অসাবধানবশত ঘটনাটি ঘটেছে। কোনও চিকিৎসকই ইচ্ছা করে এ কাজ করবেন না। মুক্তাকে আবার ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। তিনি তা না করে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। খোঁজ নিয়েছি, বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।’’ প্রসঙ্গত জানা গিয়েছে, যে ক্নিনিকে মুক্তা সন্তানের জন্ম দেন তার কোনও লাইসেন্সও ছিল না। নাম বদলে ক্লিনিকটি চলছিল।
প্রথম আলো সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদন মুক্তাকে উদ্ধৃত করেছে। ওই সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, ‘‘৩০ নভেম্বর রানিরবন্দর পলিটেক ক্লিনিকে আমার সিজার হয়। বাড়ি ফেরার পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। ক্লিনিকে যোগাযোগ করলে তারা ওষুধ লিখে দেয় এবং আবার ভর্তি হতে বলে। পরে আমার স্বামী দিনাজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে আবার অপারেশন হয়। ডাক্তার পেটের ভেতর থেকে কাপড় বার করেছেন। কী যে যন্ত্রণা! আর যেন এ রকম কারও না হয়।’’