অধিবেশন শুরুর আগে পাক প্রধানমন্ত্রী দলীয় সংসদসদস্যদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন
তাঁর বিরুদ্ধে যখন অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে, তখন তিনিই উপস্থিত নেই ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে। শনিবার পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অ্যাসেম্বলির অধিবেশন বসেছে। স্পিকার আসাদ কায়সারের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের সময় ঠিক সাড়ে দশটায় (ভারতীয় সময় ১১টা) প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। পিএমএল-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ-সহ বিরোধীরা যখন যুক্তিজাল বিস্তার করছেন, তখন যাঁকে নিয়ে এই বিবাদ, অ্যাসেম্বলির ভিতর কিন্তু সেই ইমরান খান উপস্থিত ছিলেন না।
যদিও পিটিআইয়ের (ইমরানের দল) এক নেতার যুক্তি, যেহেতু অ্যাসেম্বলির কার্যবিধির চতুর্থ ধাপে অনাস্থা প্রস্তাবে উপর ভোটাভুটি, তাই প্রধানমন্ত্রী সংসদে থেকে কী করবেন? কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে এমন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। কারণ তাঁকে নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে কী যুক্তি তুলে ধরছেন বিরোধীরা, তা শোনা বাঞ্ছনীয়।
তবে আলোচনার সময় অ্যাসেম্বলিতে না গেলেও, অধিবেশন শুরুর আগে পাক প্রধানমন্ত্রী দলীয় সদস্যদের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন। সূত্রের খবর, অধিবেশন চলাকালীন শাসকদলের ৩০ জনকে কক্ষের ভিতরে দেখা যায়।
তবে এর আগের বার যখন অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং ভোটাভুটির জন্য অধিবেশন বসেছিল, তখনও কক্ষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন না পাক প্রধানমন্ত্রী। তিনি তখন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির সঙ্গে দেখা করতে চলে যান। অঙ্কের বিচারে হার নিশ্চিত জেনে অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিতে বলেন। অবশ্য এর আগের অধিবেশনে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে চর্চা শুরু হওয়ার আগে প্রস্তাবকেই অসাংবিধানিক বলে অধিবেশন মুলতবি করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। তার পর জল গড়ায় শীর্ষ আদালতের দরজায়।
প্রশ্ন হল কেন, বিরোধীদের আলোচনা শোনার জন্য কক্ষে উপস্থিত থাকছেন না প্রধানমন্ত্রী? দলেরই এক নেতার কথায়, প্রধানমন্ত্রী তো আগের দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছেন, এই অনাস্থা প্রস্তাব আনার পিছনে ‘বিদেশি হাত’ রয়েছে। তাই তিনি এড়িয়ে গিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, এই আলোচনা তাঁর কাছে অর্থহীন। তবে বিরোধীদের দাবি, হার নিশ্চিত জেনেই তিনি কক্ষের আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছেন।
সংবাদমাধ্যম কাছে এক পিটিআই নেতা আব্দুল সামাদ ইয়াকুবের দাবি, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে শনিবার ভোটাভুটি না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার। রবি অথবা সোমবার ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে সূত্রের খবর, শেষ মুহূর্তেও ইমরান চেষ্টা চালাচ্ছেন অনাস্থা ভোট রুখে দেওয়ার। বাড়িতেই দলের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পিটিশন দাখিল করার খসড়া নিয়ে।