পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের দরজা খুলে দিল বাংলাদেশ। ফাইল চিত্র
পথ পাল্টে তারা নাকি হুগলি মোহনা ছুঁয়ে পশ্চিমবঙ্গের ত্রিসীমানাতেই আর বিশেষ ঢুকছে না। বঙ্গোপসাগর থেকে নদী অভিযানে ইলিশকুলের পনেরো আনাই মেঘনা হয়ে বাংলাদেশ বা ইরাবতী ধরে মায়ানমারের কূলে ভিড়ছে। ফলে চলতি মরসুমে কার্যত ইলিশহীন একটা বর্ষা কাটাতে হচ্ছে এ-পারের বাঙালিকে। তবে আশার কথা, শারদোৎসবের ঠিক আগে সেই ইলিশ-সঙ্কট কিছুটা কাটতে পারে। সৌজন্যে, বাংলাদেশ সরকার।
ঠিক সাত বছর আগে, ২০১২-র জুলাই নাগাদ তিস্তার জল-চুক্তি নিয়ে টানাপড়েনে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ করে দেয় ঢাকা। তাতে কপাল পুড়েছিল এ-পারের বাঙালির। পুজো উপলক্ষে সেই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক ভাবে শিথিল করছে বাংলাদেশ। গত ২২ সেপ্টেম্বরের একটি ছাড়পত্রে শেখ হাসিনা সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ১০ অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশ ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ এ দেশে পাঠাতে রাজি বলে সরকারি সূত্রের খবর।
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলছেন, ‘‘পুজোয় বাঙালির ইলিশ-ভাগ্য প্রসন্ন হতে পারে।’’ আমদানি করা মাছের স্বাস্থ্য জরিপ করতে দিল্লি থেকে ‘স্যানিটারি ইমপোর্ট পারমিট’ জোগাড় করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান মন্ত্রী। কাল, শনিবার মহালয়ার সকালেই পদ্মার ‘রুপোলি শস্য’ ফের আইনসিদ্ধ পথে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে পারার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বেঙ্গল ফিশ ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদের কথায়, ‘‘বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কলকাতা ও শিলিগুড়িতে যাবে ইলিশ।’’ এখন আকালের বাজারে এক কেজির ইলিশ ১২০০-১৪০০ টাকাতেও বিকোচ্ছে। বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পদ্মার ইলিশের দাম ঠিক হবে নিলামে। তবে এই পুজোতেই পরে ইলিশের দাম পড়তে পারে বলে আনোয়ারের আশ্বাস।
কারও কারও মতে, হাসিনা সরকারের স্থিতিশীল অবস্থাই পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের দরজা খুলে দিল। ভবিষ্যতে ইলিশ-সঙ্কট কেটে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এ বার রান্নাপুজোয় ইলিশ তেমন জোটেনি বাঙালির। দুর্গাপুজোয় অনেক বাড়ির পুজোর ভোগে ইলিশ গুরুত্বপূর্ণ। বিজয়াদশমী পর্যন্ত ইলিশ-ভোজের নানা আচার প্রচলিত। দ্বাদশী পর্যন্ত ইলিশের জোগান অটুট থাকছে। পুজোয় আমবাঙালির কাছে এর থেকে ভাল খবর আর কী হতে পারে!