ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।—ছবি: সংগৃহীত।
নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে যে প্রস্তাবটি আসতে চলেছে তাতে কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের। বিষয়টি নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি নয়াদিল্লি। সূত্রের মতে, বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ। ইতিমধ্যেই বিশ্বের কাছে এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করা শুরু করেছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য শাফাক মহম্মদ জন্মসূত্রে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের। তিনিই এই প্রস্তাবের অন্যতম কারিগর। গোটা বিষয়টির পিছনে ইসলামাবাদের কোনও পরোক্ষ ভুমিকা রয়েছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র।
সূত্রের খবর, এই আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ এবং ‘বিভেদকামী’ হিসেবে চিহ্নিত করে একে বদল করার আহ্বান জানানো হয়েছে ওই প্রস্তাবে। ভারতে ‘ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ’ প্রকৃতপক্ষে ‘ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা’ তৈরি করছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে ওই প্রস্তাবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট দশটি ভাগে ভাগ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যেরা তাঁদের পর্যবেক্ষণ এবং মতামত জানিয়েছেন প্রস্তাবে। পার্লামেন্টের ছ’টি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আনা এই প্রস্তাবটিতে বলা হচ্ছে, ‘ভারত সরকারকে এই মর্মে সতর্ক করা হচ্ছে যে সেখানকার ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যের জন্ম দিচ্ছে। এই নয়া নাগরিকত্ব আইন ভারতের আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতাও লঙ্ঘন করছে। এটি শুধুমাত্র বৈষম্যমূলকই নয়, বিপজ্জনকভাবে বিভেদকামীও বটে। সরকারের উচিত অবিলম্বে দেশের নাগরিকদের আবেদনে সাড়া দেওয়া, সমাজের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে কথা বলা।’ শুধু নয়া নাগরিকত্ব আইন-ই নয়, এনআরসি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ওই প্রস্তাবে। বলা হয়েছে, ‘এনআরসি নিয়ে যে প্রাসঙ্গিক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, ভারত সরকার তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করুক। ভারতে যে ভাবে নাগরিকত্ব নির্ণয় করা হয়, এনআরসি-র ফলে তাতে বিপজ্জনক পরিবর্তন আসতে চলেছে। এর ফলে বড় মাপের নৈরাজ্য তৈরি হবে।’ সরকারের বিরুদ্ধে বাগ্স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের আনা ওই প্রস্তাবে স্থানে স্থানে নেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার নিন্দা করা হয়েছে।