পাকিস্তানের বালুচিস্তান এবং আফগানিস্তানের কন্দহর প্রদেশের চমন সীমান্তে জড়ো হওয়া আফগান শরণার্থীদের ভিড়। ছবি: সংগৃহীত
তালিবান হামলা নয়, এ বার পাক-আফগান সীমান্তে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল পদপিষ্ট হয়ে! বৃহস্পতিবার বিকেলে পাকিস্তানের বালুচিস্তান এবং আফগানিস্তানের কন্দহর প্রদেশের চমন সীমান্তে জড়ো হওয়া আফগান শরণার্থীদের ভিড়ের চাপে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন
আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারে পরে কাবুল বিমানবন্দর বন্ধ হতেই সীমান্তে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে আতঙ্কিত আফগান শরণার্থীদের। কিন্তু তাদের আশ্রয় দিতে নারাজ ইমরান খান সরকার। ইতিমধ্যেই চমন সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করেছে পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সীমান্ত পেরোতে মরিয়া কয়েক হাজার আফগান শরণার্থী জোর করে কন্দহরের স্পিন বোল্ডাক শহর থেকে চমন গেট পেরনোর চেষ্টা করেন। সে সময় পাক আধাসেনা বাধা দিলে ধাক্কাধাক্কিতে পদপিষ্ট হন অনেকে।
ইতিমধ্যেই চমন সীমান্তের ওই দুর্ঘটনার একটি ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে এসেছে (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতা যাচাই করেনি)। তাতে দেখা যাচ্ছে কয়েকশো আফগান শরণার্থী সীমান্ত লঙ্ঘনের চেষ্টা করছেন। চমনের পাশাপাশি পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের তোরখাম সীমান্তে বরাবরও ভিড় জমতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। কার্যত একই একই অবস্থা ইরান সীমান্তে ইসলাম কালা ও তুর্কমেনিস্তান সীমান্ত-ঘেঁষা টোরঘুন্ডিরও। তালিবানের নাগাল এড়াতে মরিয়া আফগানরা সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিতে চাইছেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রে।
ইরান এবং তাজিকিস্তান ইতিমধ্যেই বেশ কিছু আফগানিস্তানের শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। যদিও আশ্রয়প্রার্থী আফগানদের পাশে দাঁড়ায়নি পাকিস্তান। পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদের সাফাই, ‘‘নিরাপত্তাজনিত কারণেই আমরা সাময়িক ভাবে আফগানিস্তান সীমান্ত বন্ধ রেখেছি।’’
সোমবার রাতে কাবুল থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার পর্ব শেষ হওয়ার পরেই সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেখানকার বিমানবন্দর। ফলে আমেরিকায় পুনর্বাসনের পথ যে আপাতত বন্ধ তা, তা বুঝতে পেরেছেন আফগান নাগরিকেরা। সে কারণেই সীমান্তগুলিতে ভিড় বাড়ছে বলে মনে করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার শেষ হওয়ার পরে যে এমন পরিস্থিতি হতে পারে বলে আগেই আঁচ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক কমিশন। সংস্থার হাই কমিশনার শাবিয়া মান্টো গত মাসে আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন।