দাউদ ইব্রাহিম। — ফাইল চিত্র।
জীবিত রয়েছেন। সুস্থ রয়েছেন দাউদ ইব্রাহিম। একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে এই দাবিই করলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছোটা শাকিল। উড়িয়ে দিলেন গ্যাংস্টারকে বিষ খাইয়ে খুনের চেষ্টার জল্পনা।
দাউদের ডানহাত বলে পরিচিত ছোটা শাকিল একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘দাউদ জীবিত এবং সুস্থ রয়েছেন। এই ভুয়ো খবর দেখে আমি স্তম্ভিত হয়েছি। রবিবারই একাধিক বার ওঁর সঙ্গে দেখা করেছি আমি।’’
সোমবারই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, গুরুতর অসুস্থ হয়ে করাচির হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দাউদ। সমাজমাধ্যমে এই নিয়ে একাধিক পোস্ট দেখা যায়। অনেকে আবার পাকিস্তানের তদারকি প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার উল হকের একটি পোস্টের স্কিনশট শেয়ার করেন। সেই পোস্টে লেখা, দাউদের মৃত্যু হয়েছে। যদিও পরে জানা যায়, ওই অ্যাকাউন্টটি ভুয়ো। ওই ভাইরাল মেসেজে লেখা হয়েছিল, ‘‘মানবতার মসিহা, প্রত্যেক পাকিস্তানির মনের খুব কাছে থাকা, আমাদের প্রিয় দাউদ ইব্রাহিমের মৃত্যু হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় কেউ বিষ খাইয়েছেন তাঁকে। করাচির হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। স্বর্গে যান, এই কামনা করি।’’
এই পোস্টের পরেই দাউদকে বিষ খাওয়ানোর জল্পনা জোরালো হয়। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের সূত্রে জানা যায়, তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। একটা সূত্রের তরফে দাবি করা হয়, বিষ খাওয়ানো হয়েছে দাউদকে। যদিও বিষয়টি নিশ্চিত করেনি কোনও পক্ষ। দাউদের পরিবারের তরফেও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেই দাবি। পাক সংবাদ মাধ্যমেও তৈরি হয় জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলির একাংশ দাবি করে, করাচির হাসপাতালে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয়েছে দাউদকে। হাসপাতালের যে অংশে তিনি রয়েছেন, সেখানে আর কোনও রোগীকে রাখা হয়নি। কাউকে ধারেকাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
দাউদকে নিয়ে এর আগে বিভিন্ন খবর সংবাদ মাধ্যমে বার বার প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর খবরও প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই দাবি খারিজ করা হয় দাউদের পক্ষ থেকে। ২০২৩ সালে একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করে, করাচিতে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছেন দাউদ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএর জেরার সময় এই কথা জানিয়েছিলেন দাউদের প্রয়াত বোন হাসিনা পার্কারের ছেলে আলিশাহ ইব্রাহিম পার্কার। তিনি এও জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের করাচির আবদুল্লা গাজি বাবা দরগার কাছে থাকেন দাউদ। এক পাঠান মহিলাকে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছেন। তবে প্রথম স্ত্রী ময়জ়াবিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়নি তাঁর।
অভিযোগ, ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বইয়ে যে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল, তার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন দাউদ। পাকিস্তান থেকে এই হামলা পরিচালনা করেছিলেন তিনি। আমেরিকা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপুঞ্জ, সবার খাতাতেই ঘোষিত বিশ্বমানের জঙ্গি দাউদ। আল কায়েদা, তালিবানের সঙ্গেও তাঁর যোগ ছিল বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, বিশ্ব জুড়ে নিষিদ্ধ মাদক পাচার চক্র চালান দাউদ। জঙ্গি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সেই কারবার চালান তিনি। এ বার সেই দাউদ ভর্তি হাসপাতালে বলে অভিযোগ।