প্রতীকী ছবি।
এ বার আমেরিকায় সাইবার হানার কথা মেনে নিল সে দেশের এনার্জি ডিপার্টমেন্টও। আমেরিকান সরকারি তথ্যে এটাই সবচেয়ে বড় হ্যাকিং বলে জানাল এই দফতর। এই দফতরের অধীনেই রয়েছে পরমাণু অস্ত্রশস্ত্র। তবে অস্ত্রাগারের তথ্য হ্যাকাররা চুরি করতে বা হাতিয়ে নিতে পারেনি বলেই দাবি দফতরের আধিকারিকদের। বিষয়টি নিয়ে বিদায়ী প্রসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনও মন্তব্য করেননি। তবে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছেন ‘প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট’ জো বাইডেন।
আমেরিকার বিভিন্ন সরকারি দফতরে বেশ কিছু দিন ধরেই সাইবার হানা নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। কিন্তু সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় হল, হ্যাকারদের উদ্দেশ্য ঠিক কী ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে কোন দফতরের কী তথ্য চুরি গিয়েছে বা আদৌ কিছু খোয়া গিয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হ্যাকিংয়ের কোনও প্রত্যক্ষ প্রভাব এখনও পড়েনি। তবে অদূর ভবিষ্যতে যে পড়বে না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আপাতত আমেরিকার বিভিন্ন সরকারি দফতরে সফটওয়্যার সরবরাহকারী একটি সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই সংস্থার সফটওয়্যার সরিয়ে ফেলতে বা নিষ্ক্রিয় করে দিতে।
হোয়াইট হাউসের একাধিক সূত্রে খবর, অন্তত এ বছরের মার্চ থেকে এই হ্যাকিংয়ের চেষ্টা চলছিল। কিন্তু তা নজরে এসেছে প্রায় ৯ মাস পর। আর বিষয়টি সামনে আসতেই কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে আমেরিকার সাইবার নিরাপত্তার দেখভালের দায়িত্বে থাকা সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার এজেন্সি। সংস্থার বক্তব্য, রীতিমতো পরিকল্পনা করে দীর্ঘ দিন ধরে ধীরে ধীরে এগচ্ছিল হ্যাকাররা। দফতরের মুখপাত্র শার্লিন হাইন্স নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, সাইবার তথ্যে হামলা হয়েছে। তবে পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তায় তাতে কোনও প্রভাব পড়েনি।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ করেই খুন হাথরসের নির্যাতিতা, চার্জশিটে বলল সিবিআই
কিন্তু হোয়াইট হাউস প্রশাসনের মাথাব্যথার আরও কারণ হল, হ্যাকারদের সম্পর্কেও বিন্দুমাত্র আঁচ করা যায়নি। এর পিছনে কোনও ব্যক্তি, নাকি কোনও দেশ রয়েছে, তা নিয়ে বিস্তর ধোঁয়াশা। প্রাথমিক ভাবে সন্দেহের তির রাশিয়ার দিকে। যদিও ওয়াশিংটনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, সাইবার তথ্যের উপর নজরদারি বা গুপ্তচরবৃত্তি করে না তাঁদের দেশের সরকার।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ইস্তফা গ্রহণ করলেন না স্পিকার, সোমবার হাজিরার নির্দেশ
তবে কী ভাবে ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে তথ্য হাতানোর চেষ্টা হয়েছিল, তদন্তে তা নিয়ে এক প্রকার নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। বিভিন্ন সরকারি দফতরে প্রায় ১৮ হাজার সফটওয়্যার দিয়েছে ‘সোলার উইন্ডস ওরিয়ন’ নামে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। মার্চ মাসে ওই সফটওয়্যারে প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্য কাজে সমস্যা হচ্ছিল। তখন ওই সফটওয়্যারগুলির আপডেট চাওয়া হয়েছিল অনলাইনেই। সেই আপডেটের সময়েই ওই ম্যালওয়্যার ঢুকে পড়েছিল। তবে কী কী তথ্য চুরি হয়েছে, সেটা বের করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এফবিআই-এর কাছে।