প্রতীকী ছবি।
পাকিস্তানে পোলিও টিকাকরণের ‘ভুয়ো’ কর্মসূচি চালানোর আড়ালে অ্যাবটাবাদে ওসামা বিন লাদেনের খোঁজ পেয়েছিলেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। সালটা ২০১১। তার পরই তাঁকে খতম করে আমেরিকার বিশেষ বাহিনী।
২০১১-র সেই টিকাকরণ কর্মসূচির ‘ভূত’ ২০২১-এও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে পাকিস্তানিদের। ফলে করোনার টিকাকরণ কর্মসূচি চালাতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। স্বাস্থ্যকর্মীদের বাঁকা চোখে দেখা শুরু করেছেন নাগরিকরা। একটা ‘অবিশ্বাস’-এর বাতাবরণ তৈরি হয়েছে এই কর্মসূচিকে ঘিরে। নাগরিকরা টিকা নিতে অস্বীকার করছেন। শিশুদেরও টিকা নেওয়া থেকে দূরে রাখছেন।
এ তো গেল একটা সমস্যা। আরও একটা সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে এই কর্মসূচি চালাতে গিয়ে। ব্লুমবার্গ কুইন্ট-এ প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, এই কর্মসূচিকে ঘিরে একটা ‘মুসলিম বিরোধী’ তত্ত্বও কাজ করছে। নাগরিকদের মনে এই বিশ্বাস দৃঢ় ভাবে বসে গিয়েছে বলেও সে দেশের এক সূত্রের দাবি। ফলে এই জোড়া সমস্যায় মুখ থুবড়ে পড়ার মতো অবস্থা কোভিড টিকাকরণ কর্মসূচির।
এ মাসের শুরুতেই টিকাকরণ কর্মসূচি চালু করেছে পাকিস্তান। চিন থেকে ৫ লক্ষ টিকার ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে তাদের। জোর কদমে এই কর্মসূচি শুরু হতেই ধাক্কা খেয়েছে ‘লাদেন এবং মুসলিম বিরোধী’ তত্ত্বের কারণে।
কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা টিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। চিনে অনুমোদন না পাওয়া টিকা কী ভাবে পাকিস্তানে ছাড় দেওয়া হল তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। টিকা নেওয়ার পিছনে সেই তত্ত্বও কি কাজ করছে সেটাও খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।
পাকিস্তানে করেনায় আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১২ হাজার মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান যখন টিকাকরণ কর্মসূচি নিয়ে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই এমন ধাক্কায় দিশাহারা প্রশাসন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, পোলিও-র টিকা নিয়ে যে ভাবে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও সেই সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে প্রশাসনকে।