সাও পাওলোর রাস্তায় টিকাকরণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
চিনের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার পরীক্ষা নিয়ে ব্রাজিলে সরকারের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে। পরিস্থিতি এমন দিকে মোড় নিয়েছে যে, দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং গভর্নরদের বিরুদ্ধে সরাসরি ময়দানে নেমে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। গড়ে তুলছেন জনমতও। সিনোভ্যাক নামে চিনা সংস্থার তৈরি ওই টিকা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক বলে ইতিমধ্যেই ফরমান জারি করে বসেছেন সাও পাওলোর স্টেট গভর্নর জোয়াও ডোরিয়া। ওই বাধ্যতামূলক টিকাকরণ কর্মসূচির প্রতিবাদে রবিবার সাও পাওলো এবং রিও ডি জেনেইরোতে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ।
চিনের সিনোভ্যাকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে করোনার টিকা তৈরির কাজ চালাচ্ছে ব্রাজিলের বুয়াটানটান ইনস্টিটিউট। এর মধ্যেই সেই টিকাকরণ বাধ্যতামূলক বলে নির্দেশ দিয়েছেন ডোরিয়া। তার প্রতিবাদে বলসোনারোর পক্ষে এ দিন সাও পাওলোর রাস্তায় জড়ো হন শতাধিক বিক্ষোভকারী। তাঁরা গভর্নরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘‘ডোরিয়ার পতন হবে।’’ তাঁর পদত্যাগেরও দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা। এ দিনই রিও ডি জেনেইরো শহরের কোপাকাবানা বিচেও চলে বিক্ষোভ।
আন্তর্জাতিক মহলে বরাবরই চিন বিরোধী অবস্থান বলসোনারোর। সিনোভ্যাকের টিকা নিয়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর দাবি, চিনা টিকার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। ওই টিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ব্রাজিলের নাগরিকদের গিনিপিগ বানানো চলবে না বলেও দাবি তুলেছেন তিনি। অথচ সেই টিকাকে ছাড়পত্র দেওয়ার পক্ষে বলসোনারোর সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এডুয়ার্ডো পাজেল্লো। এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যামিলটন মৌরাও ওই টিকা কেনার পক্ষে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত কমে ৪৫ হাজার, দেশে মোট সুস্থ বেড়ে ৭৫ লাখ
আরও পড়ুন: অবৈধ দখলদারি লুকোতে গিলগিট-বালটিস্তানকে নুতন প্রদেশ ঘোষণা, কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের
ব্রাজিলে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৫৫ লক্ষ ৪৫ হাজারের বেশি। প্রাণ হারিয়েছেন ১ লক্ষ ৬০ হাজার জন। এমন পরিস্থিতিতেও যত দিন গড়াচ্ছে ততই বলসোনারোর টিকাকরণ বিরোধী অবস্থানের দিকেই ঢলছেন ব্রাজিলের নাগরিকরা। সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, অক্টোবরে চিনা টিকার পক্ষে মত দিয়েছেন ৬৩ শতাংশ মানুষ। অথচ ৪ মাস আগেও তা ছিল ৮৫ শতাংশ। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বলসোনারোর পাল্লা ক্রমশ ভারী হচ্ছে।