ওয়াশিংটনে করোনা মোকাবিলার প্রস্তুতি। ছবি: রয়টার্স
দ্রুত গ্রাস করছে গোটা বিশ্ব। অ্যান্টার্কটিকা বাদে নোভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে ছ’টি মহাদেশেই। আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থার পর এ বার করোনার সংক্রমণকে প্যানডেমিক বা ‘অতিমারী’ (মহামারীর চেয়েও ভয়াবহ) ঘোষণা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। বুধবার এই ঘোষণা করে করোনার সংক্রমণকে ‘অভূতপূর্ব’ বলেছেন হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস আধানম ঘেব্রিয়েসাস। ইউরোপের কোনও দেশ থেকে আমেরিকায় বেড়াতে যাওয়ার উপর এক মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা।
অতিমারি করোনা
জানুয়ারিতে ‘আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছিল হু। কিন্তু তার পর থেকে হু হু করে বেড়েছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। সারা বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে চার হাজারেরও বেশি মানুষ। আক্রান্ত প্রায় ১২ হাজার। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া প্রায় সব দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসকে ‘অতিমারী’ ঘোষণা করে হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল ঘেব্রিয়েসাস বুধবার বলেন, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আগে কখনও এত অতিমারীর আকারে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়নি। একই সঙ্গে এটাও সত্যি যে এই অতিমারী নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। পরিস্থিতিকে অতিমারী ঘোষণা করার পাশাপাশি করোনার বিপদ নিয়ে হু তার অবস্থান পরিবর্তন করছে না। রোগ মোকাবিলায় হু এবং দেশগুলির যা করণীয়, তা করা হচ্ছে।’’
হু-এর পরামর্শ
অতিমারী ঘোষণার পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় কী কী করতে হবে, তা নিয়ে আগের পরামর্শগুলি ফের জানিয়েছেন ঘেব্রিয়েস। তাঁর পরামর্শ, কোনও দেশে করোনা সংক্রমণের সন্দেহ হলে আগে কোয়ারেন্টাইন বা আলাদা করে রেখে পরীক্ষা করতে হবে। কারও শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হলে তাঁর সংস্পর্শে যাঁরা যাঁরা এসেছেন, তাঁদেরও পরীক্ষা ও আলাদা করার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে ব্যাপক আকারে ছড়ালে ক্লাস্টার বা একসঙ্গে অনেককে আলাদা করে রেখেও করোনার মোকাবিলা যেতে পারে, বলেছেন ঘেব্রিয়েস।
আরও পড়ুন: করোনা-আক্রান্ত সস্ত্রীক মার্কিন অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস, রাখা হল আইসোলেশনে
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী, নজরে জনসনও
আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা
হু অতিমারি ঘোষণা করার পরেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিল আমেরিকা। ইউরোপ থেকে মার্কিন মুলুকে বেড়াতে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল হোয়াইট হাউস। এক মাসের জন্য এই বিধিনিষেধ আরোপ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশ করোনার মোকাবিলায় ব্যর্থ। চিনে যাওয়া বা সেখান থেকে আসার উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেনি ইউরোপের অধিকাংশ দেশ। তাই কঠিন হলেও প্রয়োজনীয় এই সিদ্ধান্ত নিতে হল। ট্রাম্প প্রশাসন সূত্রে খবর, ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যও বন্ধ করে দিতে পারে আমেরিকা। সরকারি এই বিবৃতির আগে পর পর টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমেরিকা ও বিশ্ববাসীকে বাঁচাতে করোনার চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ এবং ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য একটি নীতি তৈরি করছে আমেরিকা।’’