ছবি রয়টার্স।
গত কাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তাঁর দেশের সংস্থার হাত ধরে খুব শীঘ্রই ‘সুখবর’ আসছে। আর আজ চমক দিল রাশিয়া। একটি মার্কিন সংবাদ সংস্থার কাছে রাশিয়ার দাবি, ১০ অগস্ট কিংবা তারও আগে ভ্যাকসিন আনতে চলেছে তারা। রুশ আধিকারিক কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, ‘‘ঠিক যেন স্পুটনিকের মুহূর্ত। স্পুটনিকের কথা শুনেও আমেরিকা চমকে গিয়েছিল। ভ্যাকসিনের ব্যাপারও একই রকম হয়েছে। রাশিয়াই বাজারে আনবে প্রথম ভ্যাকসিন।’’
মার্কিন সংবাদ সংস্থার রিপোর্টে অবশ্য এ প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ, তার কার্যকারিতা বিচার— সব কিছু খতিয়ে দেখে এত তাড়াতাড়ি কী ভাবে ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়ার অনুমতি দিতে পারে রাশিয়া। তার উত্তর দেননি রুশ আধিকারিকেরা।
মার্কিন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘মডার্না’ আজ জানিয়েছে, গুরুতর সংক্রমিত বাঁদরের শরীরে দারুণ কাজ করেছে তাদের ভ্যাকসিন। তাদের আশা, মানবদেহেও ফল দেবে ভ্যাকসিনটি। মঙ্গলবার ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয় প্রাণীদেহে পরীক্ষার গবেষণাপত্রটি।
মডার্নার দাবি, গুরুতর ভাবে সংক্রমণে সম্ভাব্য প্রতিষেধকটির দু’টি ডোজ়ের দু’টি ইঞ্জেকশন বাঁচিয়ে তুলতে পারে আক্রান্তকে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও সে ভাবে দেখা যায়নি। অনেক সময় ভ্যাকসিনের প্রভাবে রোগ আরও বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। মডার্নার দাবি, কোভিড-১৯-এর সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটিতে তেমন কিছুও হয়নি। বরং উচ্চমাত্রার ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে দেখা গিয়েছে, দু’দিন বাদে বাঁদরের নাকে থাকা ভাইরাসের আর কোনও প্রতিলিপি গঠন হয়নি। একই ভাবে ফুসফুসের তরলেও কোনও ভাইরাস প্রতিলিপি তৈরি হয়নি। সব মিলিয়ে বিজ্ঞানীদের আশা, কম বা গুরুতর আক্রান্ত, যে কোনও কোভিড-রোগীর ক্ষেত্রেই ভ্যাকসিনটি কাজ করবে। ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর উপরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়ে গিয়েছে। এটি সফল হলে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল হবে নভেম্বর বা ডিসেম্বরে। দেখা হবে ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ ও কার্যকরী। মার্কিন সরকার ৯৫ কোটি ৫০ ডলার অর্থসাহায্য দিচ্ছে মডার্নাকে।
এরই মধ্যে নতুন এক স্ট্রেনের করোনাভাইরাস নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কমিশনার স্টেলা কাইরিয়াকাইডস। তিনি জানান, ইউরোপের দেশগুলোতে এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাস দেখা যাচ্ছে এখন। তবে এর জন্য মানুষের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন স্টেলা। আজ একটি বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান, সাইপ্রাসে স্থানীয় ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে ফের। কিন্তু তার উৎস এখনও জানা যায়নি। এর থেকে স্পষ্ট, অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাতেই নতুন করে সংক্রমণ ঘটছে, নতুন স্ট্রেনের ভাইরাস তৈরি হচ্ছে। এমনিতে ব্রিটেন ছাড়া ইউরোপের অন্য দেশে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। মৃতের সংখ্যার নিরিখে তৃতীয় স্থানে ব্রিটেন, ৪৫,৮৭৮। করোনায় প্রাণহানি কমাতে ওজন কমানোর উপরে জোর দিচ্ছে ব্রিটেন। তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ঘোষণা, একমাত্র সুস্বাস্থ্যই রক্ষা করতে পারে মানুষকে। এ জন্য ফ্যাট, অতিরিক্ত মিষ্টি বা মশলাদার খাওয়ার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ব্রিটেনে। দু’টি ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা, ব্রিটেনের ‘জিএসকে’ ও ফ্রান্সের ‘সানোফি’র সঙ্গেও আগাম চুক্তি করছে বরিস জনসনের সরকার। সর্বোচ্চ ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম সংস্থা দু’টির সঙ্গে ৬ কোটি ডোজ় কেনার চুক্তি করেছে তারা। মডার্নার সঙ্গেও চুক্তি করেছে ব্রিটেন।