গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে গিয়ে কার্যত ডুবতে বসেছে বিশ্ব অর্থনীতি। সব দেশেরই পরিস্থিতি কমবেশি একই। পরিত্রাণের উপায় হিসেবে ধনী শ্রেণির কাছ থেকে আরও বেশি কর আদায়ের পক্ষে সওয়াল করলেন সারা বিশ্বের ১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের মালিকদের একাংশ। নিজেদের ‘মিলিয়নেয়ারস ফর হিউম্যানিটি’ হিসেবে উল্লেখ করে একটি খোলা চিঠিতে তাঁদের আর্জি, শুধু সাময়িক নয়, স্থায়ী ভাবেই ধনী শ্রেণির উপর আরও বেশি করে কর চাপানো উচিত।
করোনাভাইরাস-লকডাউনের ক্ষত সারাতে বিভিন্ন দেশের সরকার নানা পন্থা নিয়েছে, বিক্রয় কর বাড়ানো থেকে নানা রকম কর বাড়ানোর পথে হেঁটেছে বহু দেশ। তবে বিত্তবান শ্রেণির কাছ থেকে কী ভাবে আরও বেশি কর আদায় করা যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে বেশ কয়েকটি দেশ। এ বার সেই ধনবান শ্রেণির একাংশের কাছ থেকেই এমন খোলা চিঠি আসায় সেই তত্ত্ব আরও জোরদার হল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের বেশি সম্পত্তির মালিক সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের এমন ৮০ জন বিত্তবান চিঠিতে এই প্রস্তাব দিয়েছেন। বেন অ্যান্ড জেরি আইসক্রিম সংস্থার কর্ণধার জেরি গ্রিনফিল্ডের মতো শিল্পপতি যেমন সই করেছেন, চিত্রনাট্যকার রিচার্ড কার্টিস, চিত্র পরিচালত অ্যাবিগেইল ডিজনির মতো ব্যক্তিত্বও সই করেছেন চিঠিতে।
আরও পড়ুন: হুগলিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের
চিঠির সারকথা, করোনাভাইরাসের গ্রাস থেকে অর্থনীতিকে মুক্ত করতে ধনী শ্রেণির কাছ থেকে ‘এখনই, পরে এবং স্থায়ী ভাবে’ কর আদায় করা উচিত। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা আইসিইউতে অসুস্থদের চিকিৎসা করছি না, অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি না, বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রীও পৌঁছে দিচ্ছি না। কিন্তু আমাদের টাকা আছে। প্রচুর টাকা আছে। এখন টাকা অত্যন্ত প্রয়োজন এবং করোনামুক্তির পথে আগামী কয়েক বছরেও তা দরকার হবে।’’ চিঠিতে স্বাক্ষর করা মার্কিন উদ্যোগপতি সিডনি টোপোল এবং নিউজিল্যান্ডের খুচরো বিপনী শৃঙ্খলের কর্ণধার স্টিফেন টিন্ডলের মতে, ‘‘সারা বিশ্বকেই কার্যত গ্রাস করেছে করোনাভাইরাস। সেই পরিস্থিতি থেকে বিশ্বকে মুক্ত করতে আমাদের মতো ধনীদের বিরাট ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ৩ চিনা রাজনীতিকের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, প্রত্যাঘাত করল বেজিংও
ব্রিটিশ আর্থিক সমীক্ষাকারী সংস্থা ইনস্টিটিউট অব ফিসক্যাল স্টাডিজ সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে, শুধুমাত্র ধনীদেরই নয়, আরও অনেকের উপরেই কর চাপতে চলেছে ব্রিটেনে। আবার এ মাসের গোড়ার দিকে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যানচেজ জানিয়েছেন, সরকার উচ্চবিত্তদের উপর আরও বেশি কর চাপাতে পারে। একই পথে হাঁটার কথা জানিয়েছে রাশিয়াও।