‘ফের লকডাউন চলবে না। মাস্ক পরা, পারস্পরিক দূরত্ববিধি মানি না। ভ্যাকসিন চাই না।’ এমনই স্লোগান তুলে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে বিক্ষোভ। নিয়ন্ত্রণে বেসামাল পুলিশ। শনিবার। ছবি: এএফপি।
ঝড়ের আগের শূন্যতা গ্রাস করছে ইউরোপকে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ জানিয়ে দিয়েছেন, দ্বিতীয় দফায় করোনা-ঝড় আসছেই। একে এড়ানো ‘অসম্ভব’! এই পরিস্থিতিতে নতুন করে লকডাউন ঘোষণার কথা ভাবছে তারা। ভয়ে কাঁটা হয়ে স্পেনও। সোমবার থেকে নতুন করে ‘গৃহবন্দি’ হবেন মাদ্রিদের সাড়ে ৮ লক্ষ বাসিন্দা। ফ্রান্সের পরিস্থিতিও সঙ্গীন। ভয়ে রয়েছে ইটালিও।
ইউরোপে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি রাশিয়ার পরে স্পেনে। সব চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে ব্রিটেন (৪১,৭৩২)। তার পরেই ইটালি (৩৫,৬৬৮)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বারবারই সতর্ক করে চলেছে, যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকা প্রয়োজন। স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার উপরেও জোর দিচ্ছে তারা। প্রবীণদের নিয়ে বেশি চিন্তিত হু। কিন্তু লকডাউন-বিরোধী বিক্ষোভে আজ উত্তাল হয় লন্ডন। এ ধরনের বিক্ষোভ হচ্ছে জার্মানিতেও।
ব্রিটিশ প্রশাসনের তরফে আজ জানানো হয়েছে, সংক্রমণের ঘটনা দ্বিগুণ হয়ে দৈনিক ছ’হাজারে ঠেকেছে। সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর ইংল্যান্ড এবং লন্ডন। বরিস বলেন, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউ আসছে... এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত। ভয় হচ্ছে, কিছুতেই একে এড়ানো সম্ভব হবে না।’’ গত কালই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছিলেন, সরকার ফের লকডাউন চায় না। কিন্তু পরিস্থিতি তেমন হলে, লকডাউনের পথেই হাঁটতে হবে। আজ বরিস জনসনের কথাতে একই ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, সেটা জানলে আপনারও মনে হবে কড়াকড়ি প্রয়োজন।’’
ইউরোপের ছবি
• সোমবার থেকে স্পেনের মাদ্রিদ-সহ ৩৭টি অঞ্চলে আংশিক লকডাউন শুরু হচ্ছে। গোটা দেশে এখন ছ’জনের বেশি এক জায়গায় জড়ো হওয়া নিষিদ্ধ।
• লকডাউনের কথা ভাবছে ব্রিটেনও। ইমিউনিটি বাড়াতে স্বাস্থ্যকর খাবারে জোর দিতে বলছে প্রশাসন। সপ্তাহান্তে পার্টিতে মানা। ছ’জনের বেশি কোথাও জড়ো হওয়া যাবে না। দেখলেই জরিমানা।
• ইনডোর রেস্তরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন। অপ্রয়োজনীয় সফরেও নিষেধ করা হচ্ছে।
• ডেনমার্কে বার-রেস্তরাঁ খোলা হচ্ছে অল্প সময়ের জন্য। ৫০ জনের বেশি প্রবেশ নিষেধ।
• নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম, রটারডাম-সহ একাধিক শহরে নতুন করে কড়াকড়ি।
বিশ্বে করোনা
মৃত - ৯,৫৯,৬৩০
আক্রান্ত - ৩,০৯,০৬,০৮৪
সুস্থ - ২,২৫,০৭,৩৫১
দৈনিক সংক্রমণে সম্প্রতি রেকর্ড গড়েছে ফ্রান্স। এক দিনে আক্রান্ত ১৩,২১৫ জন। অতিমারি শুরু হওয়া থেকে এ পর্যন্ত এক দিনে এত সংক্রমণ ঘটেনি। করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন অর্থমন্ত্রী ব্রুনো ল্য ম্যের। মার্সেই, নিস-সহ একাধিক ফরাসি শহরের নতুন করে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে।
স্পেনে এখন সংক্রমিতের সংখ্যা ৬,২৫,৬৫১। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মাদ্রিদের। সোমবার থেকে ৩৭টি অঞ্চলে নতুন করে লকডাউন শুরু হচ্ছে। তবে আংশিক ভাবে। অফিস, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা থাকছে। পার্টি বন্ধ। বন্ধ থাকবে পার্কও। এক জায়গায় ছ’জনের বেশি জড়ো হলেই জরিমানা। মাদ্রিদের এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, ‘‘গত দু’সপ্তাহে ১ লক্ষ লোকের মধ্যে ১ হাজার জন করোনা-সংক্রমিত হয়েছেন।’’