ছবি এএফপি।
গত সপ্তাহেই হুমকি দিয়েছিলেন। এ বার সেটা কাজে পরিণত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে তিনি জানিয়ে দিলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-কে অর্থসাহায্য বন্ধ করে দিচ্ছে আমেরিকা।
বিশ্বে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ইউরোপে আক্রান্ত ১০ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। এমন সঙ্কটে দুম করে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সংস্থাকে অর্থসাহায্য বন্ধ করে দেওয়ায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে শুরু করে চিন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো অধিকাংশ দেশ এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে। হু-প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস আজ বলেছেন, ‘‘সকলের এখন একই বিপদ, একই শত্রুর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার সময় এটা।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস বলেছেন, ‘‘এটা অর্থসাহায্য তুলে নেওয়ার সময় নয়।’’
ট্রাম্পের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সব প্রয়াস ও লক্ষ্য কোভিড-১৯ মোকাবিলাতেই রয়েছে। যখন এই সঙ্কট নিরসন হবে, তখনই অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে ভাবা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন: ১০০ পা হেঁটে ৬৭ কোটি টাকার তহবিল গড়লেন প্রাক্তন সেনা অফিসার
গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে হু ঠিক ভূমিকা পালন করছে না। উল্টে চিনের প্রতিই সংস্থার সমর্থন বেশি। চিনের দেওয়া ‘ভুয়ো তথ্য’ প্রচার করেছে হু।’’ গত বছর ডিসেম্বরে চিনে অজানা জ্বরের কথা শুনেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্রুত সক্রিয় হয়নি বলে প্রেসিডেন্টের অভিযোগ।
চিনও পাল্টা সুর চড়িয়েছে। চিনা বিদেশমন্ত্রীর মুখপাত্র ঝাও লিচিয়ান বলেন, ‘‘সাহায্য হঠাৎ বন্ধ হলে আমেরিকা-সহ সব দেশের উপরেই চাপ পড়বে।’’ এক সুর ইইউ-এর। তারা জানিয়েছে, এই সময়ে হু-র অর্থসাহায্য বন্ধ করার যুক্তি নেই। এখন বিভাজনের পথে না-হেঁটে ঐক্যের কথা ভাবা উচিত, জানিয়েছে ইইউ।
আরও পড়ুন: পর্যটক-শূন্য সৈকত দখল নিয়েছে কুমিরের দল
জার্মানির বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাস টুইটারে লিখেছেন, ‘‘প্রতিষেধক তৈরি এবং উন্নয়নে অর্থ না-এলে সেটা হতাশার।’’ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপ-বিদেশমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবখোভ বলেছেন, ‘‘আমেরিকার স্বার্থপর আচরণই প্রকাশ পেয়েছে।’’
করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে বিভিন্ন জায়গায়। ব্রিটেনে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২,৮৬৮। তবে হু-কে অর্থসাহায্য বন্ধ করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই বলে জানিয়েছে ব্রিটেন। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য না-করলেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘বিশ্বস্বাস্থ্যে হু-র ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’’
আজ উহানে বন্ধ করে দেওয়া হল সেখানকার সব চেয়ে বড় অস্থায়ী হাসপাতালটি। করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসায় ফেব্রুয়ারি মাসে মাত্র দশ দিনের মাথায় তৈরি করা হয়েছিল ওই অস্থায়ী হাসপাতালটি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)