ছবি পিটিআই।
বিশ্বজোড়া করোনা-ত্রাসের মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। চলছে সামরিক মহড়াও। সোমবারের হিসেব, সারা বিশ্বে ইতিমধ্যেই করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছুঁয়েছে। অথচ পিয়ংইয়্যাংয়ের দাবি, তাদের দেশে নতুন করে সংক্রমণের খবর নেই। ভাইরাস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে! উত্তর কোরিয়ার এই দাবি নিয়েই আজ সন্দেহপ্রকাশ করলেন বিশেষজ্ঞরা। চিনের মতোই তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠল কিম জং উনের দেশের বিরুদ্ধেও। সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেকে মুখ খুললেন, ‘‘করোনা হয়েছে জেনেই যারা নিজের দেশের নাগরিককে গুলি করে মেরে ফেলতে পারে, তথ্য চেপে দেওয়া তাদের কাছে কী এমন ব্যাপার!’’
দু’দিন আগে কিমের বাহিনীর একটা বড় অংশেকে সামরিক মহড়া চালাতে দেখা গিয়েছিল। সরকারি সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে দেখানো হয়েছিল, স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও। অংশগ্রহণকারী সেনার কারও মুখেই মাস্ক ছিল না। পড়শি দেশ চিন এবং দক্ষিণ কোরিয়া যখন করোনা সামলাতে জেরবার হচ্ছে, তখন উত্তর কোরিয়ার এমন আচরণ বেপরোয়া বলেও মনে করছেন অনেকে। পিয়ংইয়্যাংয়ের দাবি, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এত দিন যে বিদেশিদের তারা কোয়রান্টিন রেখেছিল, তাদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে দাবি করে কিমের প্রশাসন জানিয়েছে, এপ্রিলের গোড়াতেই সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলিতে বড়সড় জমায়েতের আয়োজন করবে তারা।
বিশ্বজোড়া এই আতঙ্কের আবহে পিয়ংইয়্যাং এত বড় ঝুঁকি নিচ্ছি কী ভাবে, আজ তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত কূটনীতি বিশেষজ্ঞ মিনইয়্যাং লি। তাঁর কথায়, ‘‘এপ্রিলের গোড়ায় ওরা যে জমায়েত করবে বলছে, তা চমকে দেওয়ার মতোই। এর মানে তো এটাই দাঁড়ায় যে, সংক্রমণ ওরা কাবু করে ফেলেছে। বাস্তবটা কি সত্যিই তাই!’’
এরই মধ্য আবার করোনা-মোকবিলায় উত্তর কোরিয়ার পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করে কিমকে চিঠি লিখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করে ট্রাম্পের ঢালাও প্রশংসা করতেও শোনা গিয়েছে কিমের বোন তথা দেশের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী কিম ইয়ো জংকে। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে কিমকে পাঠানো ট্রাম্পের এই চিঠি যথেষ্ঠ ইতিবাচক বলেও মনে করছেন তিনি। জংয়ের দাবি, এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।
করোনা নিয়ে উত্তর কোরিয়া এই ‘স্বস্তি’ প্রচার নিয়ে সন্দেহ বাড়ছেই। বরাবর পিয়ংইয়্যাংয়ের বিরোধিতায় সরব নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি সোল থেকে বললেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ায় আমার আত্মীয়দের থেকে যা খবর পাচ্ছি, তাতে পরিস্থিতি এখনও রীতিমতো উদ্বেগজনক। তবু তথ্য চেপে ঢাক পেটানো চলছেই।’’