প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের জেরে বহু ভারতীয় পড়ুয়া আটকে পড়েছেন ব্রিটেনে। এ দিকে ফুরিয়ে আসছে রসদ, টাকা। ফলে প্রায় অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। বাড়ি ভাড়া দিতে না পারায় অনেকে ঠাঁইনাড়া হওয়ার ভয়ও পাচ্ছেন। উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তা কাটিয়ে বাড়ি ফেরার আশায় দিন গুনছেন তাঁরা।
ব্রিটেনে ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে কাজ করা বেশ কয়েকটি সংগঠন জানিয়েছে, এই পড়ুয়ারা অনেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি টুকটাক কাজকর্ম করে থাকা-খাওয়ার চালান। করোনা-পরিস্থিতির জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে কাজের সেই সব সুযোগ।
সেই সব পড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন পড়ুয়া ও প্রাক্তনীদের সংগঠনগুলি। এমনই একটি সংস্থা জানিয়েছে, অন্তত ৩ হাজার ভারতীয় পড়ুয়ার কাছে তারা খাবার পৌঁছে দিয়েছে। অন্য একটি সংগঠন জানিয়েছে, কয়েকশো ভারতীয় পড়ুয়া খাবার চেয়ে ফোনে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। বেডফোর্ডের একটি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা চরণ শেখন জানালেন, এর বাইরেও বিশাল সংখ্যক পড়ুয়া রয়েছেন, যাঁরা কোনও সাহায্য পাচ্ছেন না। চরণদের সংস্থা স্থানীয় ৬০ জন পড়ুয়ার দায়িত্ব নিয়েছে। গত চার সপ্তাহ ধরে রোজ তাঁদের নিয়ম করে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য জায়গাতেও বেশ কিছু পড়ুয়াকে বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে শেখনের সংস্থা। বিষয়টি নজরে আসায় ব্রিটেনের ভারতীয় হাইকমিশন নিজেদের ওয়েবসাইটে শেখনদের সংস্থার মতো বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নাম-তালিকা প্রকাশ করেছে। পড়ুয়ারা সেখানে যোগাযোগ করে সাহায্যের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
লন্ডনের গ্রিনিচ ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া সমীর ঢোরে ভারতীয় পড়ুয়াদের একটি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট। বললেন, ‘‘বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে চেয়ে অনেকে কান্নাকাটি করছেন। হাতে টাকা নেই। খাবার নেই। থাকার জায়গা হারানোর উপক্রম। এমনকি, আত্মহত্যার কথাও বলেছেন অনেকে।’’
শেখনের দাবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি পড়ুয়াদের অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। বেশ কিছু ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের জন্য তাঁরা বিশেষ তহবিল তৈরি করেছেন। কিন্তু পড়ুয়ারা সব সময় তাঁদের সমস্যার কথা জানাচ্ছেন না। ফলে ঠিক মতো সাহায্য করা যাচ্ছে না। তাই খাওয়া, থাকা, মানসিক সহায়তা বা যে কোনও ধরনের সমস্যা হোক না কেন, পড়ুয়াদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।