লকডাউন শিথিল হতে শুরু করেছে ইটালিতে।—ছবি এএফপি।
টানা তিন মাস পরে লকডাউন শিথিল হতে শুরু করেছে ইটালিতে। কমেছে মৃত্যু, জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছেন মানুষ। গত রবিবার মিলানের এক চিকিৎসক দাবি করেছিলেন, তাঁদের দেশ থেকে এই মারণ ভাইরাস যেমন বিদায় নিয়েছে, সেই সঙ্গে এক ধাক্কায় অনেকখানি শক্তিও কমে গিয়েছে কোভিড-১৯-এর। কিন্তু এই দাবির এক দিনের মাথাতেই গোটা বিশ্বকে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এক সাংবাদিক বৈঠকে হু কর্তা মাইকেল জে রায়ান জানালেন, করোনাভাইরাসের শক্তিক্ষয় হয়েছে, এখনই এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। সতর্ক না-থাকলে আগের মতো একই শক্তিতে বহু মানুষের প্রাণ কাড়তে পারে এই ভাইরাস।
উত্তর ইটালির লম্বার্ডি এলাকা করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। যার মধ্যে পড়ে মিলান শহরও। সান রাফায়েল হাসপাতালের প্রধান আলবের্তো জ়াংগ্রিলো সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, গত ১০ দিনে যে সব রোগীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে, প্রতিটিতেই দেখা গিয়েছে যে, ভাইরাসের প্রকোপ রোগীর শরীরে তুলনামূলক অনেক কম। গত মাসেও যেখানে এই ধরনের লক্ষণের কথা ভাবা যায়নি, সেখানে এই রিপোর্ট বিশ্বকে আশার আলো দেখাবে বলে মত ছিল আলবের্তোর। তাঁর সঙ্গে ইটালির আরও কিছু শহরের চিকিৎসকও সহমত হন। তবে ইটালি সরকার এখনই এই দাবিতে আমল দিতে রাজি নয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মানুষ কাজে ফিরলেও পারস্পরিক দূরত্ববিধি, মাস্কের ব্যবহার ও স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়ার রীতি মেনে চলতেই হবে।
এরই মধ্যে সংবাদ সংস্থা এপি-র একটি তদন্তমূলক রিপোর্ট দাবি করেছে, গোটা বিশ্বের কাছে ভাইরাস সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চিন খুব দ্রুত তুলে ধরেছিল বলে এত দিন যে প্রশংসা হু করে এসেছে, তা আদৌ সত্যি নয়। এপি-র রিপোর্টে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, জানুয়ারির প্রথম দিকেই কোভিড-১৯-এর জেনোম সংক্রান্ত তথ্য চিনা পরীক্ষাগারগুলির হাতে চলে এলেও সেই মাসের শেষের দিকে তারা বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। তত দিন গোটা বিশ্ব এই ভাইরাসের প্রকৃতি ও ভয়াবহতা নিয়ে অন্ধকারে ছিল।
আরও পড়ুন: মিউটেশন নিয়ে অযথা আতঙ্কের কারণ নেই, বলছে নতুন গবেষণা