প্রতীকী ছবি।
ডিসেম্বর থেকে করোনা নিয়ে একের পর এক ভুল পদক্ষেপের অভিযোগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র দিকে। আমেরিকার বক্তব্য, চিনকে আড়াল করতে বিশ্বে বিপদ ডেকে এনেছে হু। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দেন, এই সংস্থাকে টাকা জোগানো বন্ধ করা হবে। এই হুমকি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ হু-র বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশই আমেরিকা বহন করে।
এই নিয়ে মুখ খুলছে না ভারত। সাউথ ব্লক সূত্রের বক্তব্য, অদূর ভবিষ্যতেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমালোচনার পথে হাঁটবে না মোদী সরকার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর পর ভুল করেছে হু। জানুয়ারি মাসে চিনা নেতৃত্বের সঙ্গে গলা মিলিয়ে হু বলে, করোনাভাইরাস কখনই মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় না। উহান প্রদেশে যাঁরা যাতায়াত করেছেন, তাঁদের জন্য কোনও বিশেষ স্বাস্থ্যবিধির পরামর্শও হু দেয়নি। ৩১ ডিসেম্বর তাইওয়ান একটি চিঠিতে হু-কে জানায়, সেখানে এক ব্যক্তি থেকে অন্যের করোনা সংক্রমণ ঘটছে। অভিযোগ, সতর্কবার্তাও অগ্রাহ্য করা হয়। জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত মানব সংক্রমণ নস্যাৎ করার তত্ত্বেই অটল ছিল হু। গোটা বিষয়টিকে অতিমারি চিহ্নিত করতেও দেরি করে তারা।
অভিযোগ উঠছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেলের পদে বসার আগে নিজের দেশ ইথিয়োপিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মহামারি ধামাচাপা দিয়েছিলেন টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ও’নিল ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল অ্যান্ড গ্লোবাল হেলথ ল’-এর অধিকর্তা লরেন্স ও’গস্টিন সম্প্রতি বলেছেন, “টেড্রস যোগ্য জনস্বাস্থ্য অফিসার। তবে নিজের দেশে যখন বারবার কলেরা হচ্ছিল, তখন সৎ ভাবে তা চিহ্নিত করা উচিত ছিল তাঁর।”
আরও পড়ুন: তথ্য সুরক্ষার আশ্বাস গুগল, অ্যাপলের
আরও পড়ুন: এনআরএসের পুনরাবৃত্তি, করোনা আক্রান্তের মৃত্যুতে বন্ধ মেডিক্যাল কলেজের ২ বিভাগ
সূত্রের বক্তব্য, ঐতিহ্যগত ভাবে কোনও আন্তর্জাতিক বহুপাক্ষিক সংস্থার সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকার নীতি নিয়ে চলাই ভারতের বিদেশনীতির অঙ্গ। গত মাসে জি-২০-র করোনা-বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, হু-র সংস্কার ঘটিয়ে নতুন বাস্তবতা এবং চ্যালেঞ্জকে সংস্থার আওতায় আনার সময় এসেছে। মুখ না খোলার আর একটি কারণ— করোনাকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে বিশ্বের দুই বৃহৎ শক্তি চিন এবং আমেরিকা যে ভাবে যুযুধান, ভারত তাতে পক্ষ হতে চায় না। হু-র সমালোচনা করতে হলে তা প্রকাশ্য চিন-বিরোধিতা এবং খোলাখুলি ভাবে মার্কিনপন্থী পদক্ষেপ হবে। চিনের মতো বৃহৎ শক্তিধর পড়শির সঙ্গে ঝগড়ার সময় এটা নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জামের বিপুল সরবরাহ আসছে বেজিং থেকে। করোনা মোকাবিলায় চিনই সব চেয়ে বেশি পাশে দিল্লির। হু-র প্রতি খড়্গহস্ত হওয়া চিনের প্রতি তোপ দাগারই শামিল।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)