হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রোগীদের। ছবি: এএফপি
এক দিনে আক্রান্ত ৬৯,০০০। গত কাল ফের রেকর্ড গড়েছে আমেরিকা। তবে এখন আর এ খবরে চমক নেই। এ ভাবে চললে দৈনিক করোনা-সংক্রমণ যে ১ লক্ষ ছুঁয়ে ফেলবে, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
গোটা বিশ্বে মৃত্যু ৫ লাখ ৬৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৩৬ হাজারই মার্কিন নাগরিক। করোনা-পজ়িটিভ ধরা পড়েছে নর্থ ক্যারোলাইনার সেনেটর ড্যানি ব্রিটের। এই প্রথম জেনেরাল অ্যাসেম্বলির কোনও সদস্যের করোনা ধরা পড়ল।
দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাবেভাবে অবশ্য এ নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই। শঙ্কিত নন তাঁর দেশবাসীর একাংশও। প্যারিসে ডিজ়নিল্যান্ড খুলে গিয়েছে। ফ্লরিডাতেও এ বার থিম-পার্ক খুলে দিতে সঙ্কল্পবদ্ধ ওয়াল্ট ডিজ়নি। অথচ ফ্লরিডার অবস্থা সব চেয়ে খারাপ। আমেরিকার আর এক হটস্পট টেক্সাস। সেখানকার গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন, মাস্ক পরা ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিস্থিতি সামলানো না গেলে, ফের লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখনও মাস্ক না-পরলেও, তাঁর প্রভাব থেকে সরে আসছেন রিপাবলিকান নেতারা। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে এখন মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে সবাইকে। রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ বলেন, ‘‘প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরাকে যদি আমরা অভ্যেস করতে না-পারি, তা হলে সব ব্যবসা-বাণিজ্য শাটডাউন করার পথে হাঁটতে হবে।’’ সান ফ্রান্সিসকোর কাছে একটি সংশোধনাগারে ৩৩০০ বন্দির করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। এর পরেই আট হাজার বন্দিকে জেল থেকে ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে ক্যালিফর্নিয়া। এর মধ্যে ওয়াল্ট ডিজ়নি জানিয়েছে, অর্ল্যান্ডোর থিম পার্ক খুলছেই। কমপক্ষে ১৯ হাজার লোক পার্ক না-খোলার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। ডিজ়নির কর্মী সংগঠনও সংস্থার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। ডিজ়নির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সীমিত সংখ্যক লোককে ঢুকতে দেওয়া হবে পার্কে। তার আগে সকলের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হবে। এবং মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। অথচ শুধু শুক্রবারই ফ্লরিডায় সাড়ে ১১ হাজার লোক নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ৭ হাজার লোককে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার মারা গিয়েছেন ১২০ জন। শুক্রবার আরও ৯২ জন। ইউরোপের এক-একটা দেশের থেকেও খারাপ অবস্থা ফ্লরিডার।
‘‘করোনা-পরিস্থিতির মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনযাপনের চেষ্টা করতে হবে’’— দেশবাসীর উদ্দেশে আজ এই বার্তা দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোশ্যাল মিডিয়া একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা বলেন তিনি। বরিস নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হওয়ার পরে বলেন, ‘‘মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছি। যার হয়েছে, সেই জানে এ রোগ কী!’’ এ দিন তিনি দেশবাসীকে কর্মক্ষেত্রে ফেরার আবেদন জানান। তবে এ-ও বলেন, ‘‘সব চেয়ে ভাল হয়, কাজে যান, কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন করে। আমার বার্তা এটাই।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জে আজ জাপান ও ভারতের প্রতিনিধিরা বলেন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী শক্তি, এই তিনের বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টাই করোনাকে হারানোর একমাত্র চাবিকাঠি। ভারত সরকারের বিজ্ঞান উপদেষ্টা দফতরের সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অরবিন্দ মিত্র জানান, গত এক মাসে জাপান ও ভারত একটানা সিরিজ়ে বৈঠক করেছে। বিজ্ঞানের পথ ধরেই সুরাহা মিলবে বলে আশা।