Coronavirus

রাজনীতি সরিয়ে রেখে লড়াইয়ে সফল

বেশির ভাগ সংক্রমণই ‘আমদানি করা’, অর্থাৎ দেশের বাইরে থেকে আসা। তবে তার সঙ্গেই কিছু কিছু জায়গায় ‘ক্লাস্টার’ সংক্রমণেরও হদিস মিলতে শুরু করল।

Advertisement

মোহর

হংকং শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:২৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

বিশ্ব যখন করোনার প্রকোপে জর্জরিত, বিভিন্ন দেশে লকডাউন চলছে, তখন হংকংয়ে ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করল ‘স্বাভাবিক’ জীবনযাপনের ছন্দ। জুনের মাসের মাঝামাঝি থেকে আমরা অফিসে ফিরে গেলাম। খুলে দেওয়া হল রেস্তরাঁ, নাইট ক্লাব, বার। বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতে দেখা গেল রোদ পোহানো মানুষের ঢল।

Advertisement

একই সঙ্গে প্রায় শুরু হয়ে গেল আন্তর্জাতিক উড়ান। নানা দেশ থেকে হংকংয়ে ফিরতে শুরু করলেন এ দেশের বাসিন্দারা। আর এর সঙ্গেই সাংঘাতিক ভাবে করোনা-সংক্রমণ ফিরে এল হংকংয়ে। জুলাই মাসের শেষে হঠাৎ করে দিনে ৫০-এর বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে থাকলেন। অগস্ট মাসে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা একশোয় পৌঁছলো।

বেশির ভাগ সংক্রমণই ‘আমদানি করা’, অর্থাৎ দেশের বাইরে থেকে আসা। তবে তার সঙ্গেই কিছু কিছু জায়গায় ‘ক্লাস্টার’ সংক্রমণেরও হদিস মিলতে শুরু করল। অর্থাৎ, একটি জায়গায় একসঙ্গে বেশ কয়েক জনের সংক্রমণ, যাঁদের সঙ্গে বিদেশ থেকে আসা কারও কোনও সম্পর্ক নেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রতিষেধক প্রয়োগে ছাড়পত্র নয় ইউরোপে

ফের দেখলাম হংকং সরকারের সুব্যবস্থার উদাহরণ। পরীক্ষা হতে লাগল হাজারে হাজারে। এখানকার একটি বৃদ্ধাশ্রমে বড়সড় ‘লোকাল ক্লাস্টার’ দেখা গিয়েছিল। জানতে পারলাম, ওই বৃদ্ধাশ্রমের সমস্ত বাসিন্দা ও কর্মীর পরীক্ষা তো করা হয়েইছে, সঙ্গে সঙ্গে ওই বৃদ্ধাশ্রম-লাগোয়া একটি বহুতল আবাসনের সমস্ত বাসিন্দারও বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছে।

এই দ্বিতীয় দফার সংক্রমণের পরে পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি নিয়মকানুন বেশ কড়া করে দেওয়া হল। রেস্তরাঁয় এক টেবিলে দু’জনের বেশি বসতে পারবেন না। সন্ধ্যা ছ’টার পরে সব রেস্তরাঁ বসে খাওয়ার জন্য বন্ধ। খাবার প্যাক করে বাড়ি নিয়ে আসা যাবে, কিন্তু সেখানে বসে খাওয়া যাবে না। ফের সব স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারি চলে গেল ‘ওয়র্ক ফ্রম হোম’ পদ্ধতিতে।

যদি একটা বহুতল বাড়িতে কারও করোনা-সংক্রমণ পাওয়া যায়, তা হলে সেই ফ্ল্যাট এবং বাড়িটির সব ‘কমন এরিয়া’ জীবাণুমুক্ত করা হয়। পুরোটাই সরকারের খরচায়। কোভিড আক্রান্তদের জন্য শহরের একটু বাইরে তৈরি করা হয়েছে ‘কোয়রান্টিন হাউজ়িং’। পরিষ্কার, ঝকঝকে। সম্পূর্ণ সরকারি খরচায় থাকা-খাওয়া। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘর। আর হ্যাঁ, ফ্রি ওয়াইফাই-ও রয়েছে।

এখনও এই দেশে বেশির ভাগ কড়াকড়িই চলছে। যার ফলে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ২০-২৫-এ নেমে এসেছে। রাজনৈতিক নানা মতভেদ আছেই। কিন্তু এই অতিমারি-আবহে এ ভাবেই করোনার বিরুদ্ধে হাতে হাত মিলিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এ দেশের মানুষ ও সরকার।

(লেখক ল ফার্মে কর্মরত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement