প্রতীকী ছবি
পাহাড়ে ঘেরা শহরতলিতে কড়া নিরাপত্তায় মোড়া প্রকাণ্ড সরকারি বিজ্ঞান-ভবন, ‘উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি’। চিনের উহানের এই গবেষণাগারই এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। আমেরিকার দাবি, নোভেল করোনাভাইরাসের উৎস হয়তো চিনের এই ল্যাব। গত কাল এক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীও দাবি করেছেন ভাইরাসটি চিনের তৈরি।
সম্প্রতি একটি মার্কিন টিভি চ্যানেল দাবি করে, চিনের এক গবেষণাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। প্রথমে ল্যাবের এক ইনটার্ন সংক্রমিত হন। তাঁর থেকে ছড়ায়। চিনের বিজ্ঞানীরা অবশ্য প্রথম থেকে দাবি করছেন, ভাইরাসটি উহানের মাংসের বাজার থেকে ছড়িয়েছে। কোনও প্রাণীর মাংস থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছে। কিন্তু উহানের ‘বায়োসেফটি ল্যাব’-এর অস্তিত্ব প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, চিন আদৌ সত্যি কথা বলছে তো!
প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে যা জানা গিয়েছে, তা এ রকম— এশিয়ার সর্ববৃহৎ ভাইরাস ব্যাঙ্ক রয়েছে এখানে। দেড় হাজারেরও বেশি ভাইরাস স্ট্রেন মজুত রয়েছে তাতে। চিনের ‘সেন্টার ফর ভাইরাস কালচার কালেকশন’-এর মূল প্রতিষ্ঠান এটি। ‘ক্লাস ৪ প্যাথোজেন’ (পি৪) নিয়ে গবেষণা হয় এখানে। পি৪ হল এমন জীবাণু, যা এক জন মানুষের থেকে অন্য জনের দেহে দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে। যেমন ইবোলা ভাইরাস। ইনস্টিটিউটের এই পি৪ গবেষণাগারটি তৈরি হয় ২০১৫ সালে। তবে কাজ শুরু হয় ২০১৮-তে।
সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা এএফপি উহানের এই ইনস্টিটিউটে গিয়েছিল। তারা দেখে, গবেষণা বন্ধ রয়েছে। বাইরে একটি পোস্টারে লেখা— ‘‘কঠোর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, আতঙ্কিত হবেন না। সরকারি ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করুন। বিজ্ঞানে বিশ্বাস রাখুন। গুজব ছড়াবেন না।’’
চিনের বিজ্ঞানীরা এক সময়ে দাবি করেছিলেন, ভাইরাসটির উৎস বাদুড়। কোনও এক মধ্যস্থ প্রাণী (সম্ভবত প্যাঙ্গোলিন) মারফত সেটি মানুষের দেহে ছড়ায়। কিন্তু পরে চিনা বিশেষজ্ঞদের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় ল্যানসেট-এ। তাতে দাবি করা হয়, চিনের প্রথম আক্রান্তের সঙ্গে উহানের মাংসের বাজারের কোনও সম্পর্ক ছিল না। শুরুর দিকে সংক্রমিত মোট ৪১ জনকে নিয়ে পরীক্ষা হয়েছিল। ১৩ জনের সঙ্গেই মাংসের বাজারের যোগ মেলেনি। তবে ভাইরাসটির বাদুড় বা ব্যাট ভাইরাসের সঙ্গে মিল রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা সঙ্কটেও কাশ্মীর-ইস্যু খুঁচিয়ে তুলল পাকিস্তান, কড়া জবাব দিল ভারত