ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল চিত্র।
ঘুরেফিরে ট্রাম্পের নিশানায় সেই চিন।
করোনা-সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে তাঁরই দেশ। মৃত্যু হয়েছে ৫৭ হাজারের বেশি মানুষের। যার জন্য পরোক্ষে ট্রাম্পের দিকেই আঙুল তুলছেন সমালোচকেরা। যদিও তাতে কর্ণপাত না-করে ট্রাম্প দুষে চলেছেন সেই চিনকে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া থেকে রুখতে চিন কী ব্যবস্থা নিয়েছিল তা জানতে মার্কিন প্রশাসন ‘কড়া তদন্ত’ শুরু করবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ-ও জানিয়ে রাখলেন, করোনার জেরে তাঁর দেশ যে ক্ষতির মুখে পড়েছে, তার জন্য চিনের থেকে ক্ষতিপূরণ চাইবেন তাঁরা।
করোনা নিয়ে প্রতিদিন অতিদীর্ঘ সাংবাদিক বৈঠক এবং সম্ভাব্য প্রতিকার হিসেবে সেখানে হাস্যকর সব দাওয়াই। এই দুই কারণে গত কয়েক সপ্তাহ যাবৎ যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। সব দেখেশুনে তাঁর উপদেষ্টারা পরামর্শ দিয়েছিলেন, কোভিড-১৯ নিয়ে ট্রাম্পের বেফাঁস মন্তব্যে ধাক্কা খেতে পারে তাঁর নির্বাচনী প্রচার। যে কারণে কয়েক দিন সাংবাদিক বৈঠক করেননি ট্রাম্প। তবে এক সপ্তাহও কাটেনি। আজ যথারীতি চিনকে নিশানা করে বলেছেন, ‘‘ওদের দোষী বলার পিছনে অনেক কারণই রয়েছে। আমরা কড়া তদন্ত করব। আমরা মনে করি এই অতিমারি উৎসস্থলেই থামিয়ে দেওয়া যেত। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া থেকে রোখা যেত।’’
করোনায় জার্মানির যে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য চিনের থেকে ১৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়ার কথা বলা হয়েছে সে দেশের এক সংবাদপত্রে। এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘জার্মানি যে টাকা চেয়েছে তার থেকে অনেক বেশি টাকার কথা ভাবছি।’’ কত বেশি? ‘‘টাকার পরিমাণ এখনও নির্ধারিত হয়নি। তবে অবশ্যই মোটা অঙ্ক,’’ জবাব তাঁর। এ দিকে, খারাপ মানের ও জাল টেস্টিং কিট পাঠিয়ে চিনের বিরুদ্ধে এই অতিমারি থেকেও ফায়দা তোলার অভিযোগ তুলেছেন হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: ভিড় শুধু নয়, বদ্ধ ঘরও বিপদ বাড়ায়
আরও পড়ুন: অতিমারির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত দেবী
কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বে প্রাণ কেড়েছে ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৪৫ জনের। সংক্রমণ কমাতে লকডাউনের পথে হেঁটেছে প্রায় সব দেশই। এই অবস্থায় ইউনিসেফ আবার জানিয়েছে, করোনার জেরে টিকাকরণ ব্যাহত হবে শিশুদের। সারা বিশ্বে টিকাকরণ হয়নি বা আংশিক টিকাকরণ হয়েছে এমন ৪৫ লক্ষ শিশু দক্ষিণ এশিয়ার। এবং তাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশের বেশি ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বাসিন্দা। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানাচ্ছে, করোনার আতঙ্কে ও লকডাউনের জেরে বহু বাবা-মা’ই শিশুদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে টিকা দেওয়াতে চাইবেন না। ফলে হাম, ডিপথেরিয়ার মতো টিকাকরণে রোখা যায় এমন অনেক রোগই ভয়ানক আকার নেবে। যা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপালের কোনও কোনও অংশে শুরু হয়েছে। সরবরাহ-শৃঙ্খল ভেঙে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশে এই টিকার জন্য ব্যবহৃত ওষুধের সঞ্চয় একেবারে তলানিতে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদনেও বিপত্তি ঘটছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সর্তকতা, শিশুদের এই প্রাণদায়ী টিকাকরণ না-হলে দক্ষিণ এশিয়া আর এক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থার মুখে পড়বে।
লকাডাউন চলাকালীন দেশে এক মাসে ৬২ হাজার মানুষের প্রাণরক্ষা পেয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স। অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র এক জনের সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। ব্রিটেনেও আজ নতুন কোনও মৃত্যু ঘটেনি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)