Coronavirus

উৎসবের মরসুমে কড়া নিয়মে নজরবন্দি ব্রিটেন

ব্রিটেনের পাশাপাশি আমেরিকাতেও ফাইজ়ারের টিকাকরণ শুরু হয়েছে।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪২
Share:

—ফাইল চিত্র।

বড়দিন যত এগিয়ে আসছে, করোনা নিয়ে ততই কড়াকড়ি বাড়ছে ব্রিটেনে। কয়েক কোটি মানুষ কার্যত ‘গৃহবন্দি’। পাব, রেস্তরাঁ, কাফে বন্ধ। কোথাও ছ’জনের বেশি জড়ো হলেই শাস্তি। ব্রিটেনে টিকা দেওয়া শুরু হয়ে গেলেও এতটা কড়াকড়ির একমাত্র কারণ— মৃত্যুর হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা ছাড়া, রোগীর ভাড়ে হাসপাতালগুলোর অবস্থা সঙ্গীন। সংক্রমণ কমাতে তাই বাধ্য উৎসবের দিনেও তালাবন্দি দেশ।

Advertisement

গত শনিবার থেকে ‘থ্রি-টিয়ার’ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ইংল্যান্ডে। ৩ কোটি ৮০ লক্ষ ইংল্যান্ডবাসী কড়া নিয়মের আওতায় নজরবন্দি। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ছ’সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে নর্দার্ন ইংল্যান্ড প্রশাসন। ২৮ ডিসেম্বর থেকে লকডাউন শুরু হবে ওয়েলেসে। কবে শেষ হবে সেই লকডাউন, তা জানানো হয়নি। শুধু জানানো হয়েছে, ৩ সপ্তাহ অন্তর পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখা হবে এবং সেই মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। স্কুলগুলোতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, একেবারে নতুন বছরে প্রতিষ্ঠান খুলবে। পর্যায়ক্রমে পড়ুয়াদের আসতে বলা হবে স্কুলে। যারা স্কুলে আসবে, প্রতি দিন তাদের করোনা-টেস্ট হবে। কাফে-রেস্তরাঁ থেকে অন্যান্য বিপনী, উৎসবের মুখে সব ব্যবসাই মুখ থুবড়ে পড়েছে। পর্যটনও প্রায় বন্ধ। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, গত দশ বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যে এত ক্ষতি দেখেনি কেউ।

এ অবস্থায় খানিকটা স্পষ্ট, উৎসবের মরসুম এ বারে বর্ণহীনই কাটবে। বছরের এই সময়টা সকলেই পরিবারের সঙ্গে কাটান। কিন্তু তাতেও নিষেধ করছে প্রশাসন। এ বছর প্রবীণ আত্মীয়-পরিজনেদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ কিংবা কোনও রকম গেট-টুগেদার না-করার পরামর্শ দিচ্ছে সরকার। এ-ও বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ তিনটি পরিবার পাঁচ দিনের জন্য এক জায়গায় জড়ো হতে পারে। কিন্তু তাতে যে ঝুঁকি রয়েছে, সেই দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে।

Advertisement

বিশ্বে করোনা মৃত ১৬,৭৪,৫১১ আক্রান্ত ৭,৫৬,৩৩,৮৭৯ সুস্থ ৫,৩০,৮৯,০৫০

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টুইট করে সতর্ক করেছেন, ২৩ থেকে ২৭ ডিসেম্বর কোনও বড়সড় প্ল্যান করবেন না। বরং যতটা সম্ভব লোকজনের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ছোট করে বড়দিনের অনুষ্ঠান পালন করতে বলছেন বরিস। তাঁর কথায়, ‘লিটল ক্রিসমাস’।

ব্রিটেনের পাশাপাশি আমেরিকাতেও ফাইজ়ারের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। সে দেশের মতো কড়া নিয়ম জারি না-করা হলেও, বারবারই সতর্ক করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। নয়া নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বারবারই বলছেন, টিকা দেওয়া শুরু মানেই করোনা চলে যাওয়া নয়। মাস্ক পরা ও দূরত্ববিধি মানতে হবে। থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের ছুটিতে মারাত্মক বেড়েছিল সংক্রমণ। আসন্ন বড়দিনের অনুষ্ঠান নিয়ে তাই চিন্তিত প্রশাসন। বিশেষ করে, সংক্রমণ যখন ১ কোটি ৭৬ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু ৩ লক্ষ ১৮ হাজারের কাছাকাছি। ফাইজ়ারের টিকাকে ছাড়পত্র দেওয়ার পাশাপাশি সরকার মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিন নিয়েও ভাবছে। ‘ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ)-এর কমিশনার স্টিফেন হান বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, মডার্নার কোভিড টিকাকেও জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। এফডিএ-র তৈরি নিরপেক্ষ উপদেষ্টা কমিটি এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। ট্রাম্প অবশ্য এফডিএ-র ঘোষণার আগেই টুইট করে জানিয়ে দিয়েছেন— ‘মডার্নার টিকা অনুমোদিত। শীঘ্রই গণটিকাকরণ শুরু হবে দেশ জুড়ে।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement