দূষণ-চিত্র: গত বছর এবং ২০২০-র মার্চে ফ্রান্সের বায়ুমণ্ডল যেমন।
করোনা-মোকাবিলায় লকডাউন হাতিয়ার করেছে ইউরোপের একটা বড় অংশ। তাতে সংক্রমণের হার কতটা ঠেকানো গিয়েছে, তা এখনও তেমন স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সেই আঁচ পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু এই ১০ দিনে ইউরোপের বায়ুদূষণ যে অনেকটাই কমেছে, রীতিমতো মানচিত্র প্রকাশ করে সেই দাবি আরও জোরদার করল নেদারল্যান্ডসের আবহবিজ্ঞান বিষয়ক একটি গবেষণা কেন্দ্র। মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারে বাতাসে যে পরিমাণ নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড জমে, তার তুলনামূলক অবস্থান যাচাই করতেই সংস্থাটি কোপারনিকাস সেন্টিনেল-৫পি নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহের উপর ভরসা করেছিল। তাতেই দেখা গিয়েছে, গত বছর মার্চের গোড়ায় ফ্রান্স-ইটালির বায়ুমণ্ডলে যতখানি লালচে ছোপ ছিল, এ বছরের ১৪-২৫ মার্চের মধ্যে তা অনেকটাই ঝাপসা। কোথাও সব ধুয়েমুছে সাফ।
লকডাউনের জেরে দূষণ যে কমছে, চিন এবং ইটালির আগে ও পরের মানচিত্র দিয়ে সেই তথ্য দিয়েছিল সেন্টিনেল-৫পি উপগ্রহ। এ বার ফের দেখানো হল ইটালির ছবি। সঙ্গে জুড়ল ফ্রান্স, পর্তুগাল এবং স্পেনের বায়ুচিত্রও। নেদারল্যান্ডস এবং ব্রিটেনের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। পশ্চিম ইউরোপের কয়েকটি পড়শি দেশের মতোই লকডাউনের পথে হাঁটতে শুরু করেছে ব্রিটেন। সূত্রের খবর, সামনের সপ্তাহেই ব্রিটেনের দূষণ-চিত্র স্পষ্ট হয়ে যাবে। এই সেন্টিনেল-৫পি উপগ্রহটি ব্রিটেনেরই এয়ারবাস সংস্থার তৈরি। ২০১৭-র অক্টোবরে আকাশে পাড়ি দিয়েছিল। বিজ্ঞানীদের দাবি, লকডাউনের পাশাপাশি আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেও সেন্টিনেল-৫পি-তে পাওয়া দূষণের মানচিত্রে একটা বড় তারতম্য লক্ষ করা যাচ্ছে সর্বত্র।
উপগ্রহ চিত্র থেকে চিনের দূষণমুক্তির যে-ছবিটা পাওয়া গিয়েছে, তা নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসীই শোনাল নেদারল্যান্ডসের ওই গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের। করোনা-সঙ্কট পুরোপুরি না-মিটলেও, কিছু অংশে ফের দৈনন্দিন কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছে চিন। তাতে যে ধীরে-ধীরে সেখানে ফের আগের চেহারা ফিরছে, তা নিয়েও সতর্ক করছেন আবহবিজ্ঞানীরা।