প্রতীকী চিত্র।
করোনার সংক্রমণে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ধুঁকছে। অধিকাংশ দেশের জিডিপি-তে ঋণাত্মক বৃদ্ধি বা সঙ্কোচন। কিন্তু তার মধ্যেও করোনা সঙ্কট কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও বাড়বে চিনের প্রভাব। এমনই পূর্বাভাস দিল আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ)। ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে আর্থিক বৃদ্ধি হবে, তার মধ্যে ২৬.৮ শতাংশ আসতে পারে চিন থেকে। ২০২৫ সালে সেটা বেড়ে হতে পারে ২৭.৭ শতাংশ। বিশ্ব অর্থনীতিতে অবদানের নিরিখে যা আমেরিকাকে টপকে অনেক উপরে উঠে যাবে চিন। তবে উল্লেখযোগ্য প্রভাব থাকবে ভারত, জার্মানি ও ইন্দোনেশিয়ার।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিলেও কার্যত তার প্রভাব মুক্ত চিনের অর্থনীতি। সংক্রমণ শুধুমাত্র উহান শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছে শি চিনফিং-এর প্রশাসন। দেশকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কয়েক মাস আগেই। অথচ গোটা বিশ্ব এখনও এই অতিমারির সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। এই পার্থক্যই চিনকে আর্থিক বৃদ্ধিতে এগিয়ে রাখবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এই পরিস্থিতিতেই বিশ্ব অর্থনীতির আগামী রূপরেখা কেমন হতে পারে, তার একটা আগাম চিত্র তুলে ধরেছে আইএমএফ। বর্তমানে ক্রয়ক্ষমতার নিরিখে বিশ্ব অর্থনীতিতে আমেরিকার অবদান সবচেয়ে বেশি— ২৩ শতাংশেরও বেশি। সেখানে চিনের অবদান ১৫.৫ শতাংশের মতো। ২০২৫ সালের যে অর্থনৈতিক চিত্র আইএমএফ প্রকাশ করেছে, সেই তথ্য নিয়ে মার্কিন সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গের দাবি, ২০২৫ সালে চিনের সেই অবদান বেড়ে হতে পারে ২৭.৭ শতাংশ। আমেরিকার অবদান নেমে যেতে পারে ১০.৪ শতাংশে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকতে পারে ভারত, ১৩ শতাংশ অবদান নিয়ে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে কাজ হারানো শ্রমিকদের তিন মাসের অর্ধেক মজুরি দেবে কেন্দ্র
অন্য দিকে মোটের উপর বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছুটা সদর্থক ইঙ্গিত রয়েছে আইএমএফ-এর পূর্বাভাসে। আগে বলা হয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে বিশ্বের জিডিপি সঙ্কোচন হতে পারে ৪.৯ শতাংশ। সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সেটা কিছুটা বেড়ে হতে পারে ৪.৪ শতাংশ। আগামী অর্থবর্ষে কোভিড পরবর্তী বিশ্বের জিডিপি বৃদ্ধি হতে পারে ৫.২ শতাংশ, বলছে আইএমএফ।
আরও পড়ুন: করোনা চিকিৎসায় কাজ করছে না রেমডেসিভির, হু-র পরীক্ষায় উদ্বেগ
চিনের বাড়বাড়ন্ত হলেও দারিদ্রের নিরিখে ভয়াবহ ছবির পূর্বাভাস দিচ্ছে আইএমএফ। অত্যন্ত দরিদ্র শ্রেণির মানুষের সংখ্যা গত দু’দশকের চেয়েও বেশি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে আইএমএফ-এর রিপোর্ট। বলা হয়েছে, করোনা পূর্ববর্তী পরিস্থিতির চেয়ে করোনা উত্তর সময়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক নীচে নেমে যাবে। গরিবরা আরও গরিব হবে এবং চরম দারিদ্রের মধ্যে ঢুকে পড়বে আরও ৯ কোটি মানুষ।