ইমরান খান। ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাগাল পেল না পাকিস্তান পুলিশ। তোষাখানা মামলায় অভিযুক্ত ইমরানকে গ্রেফতার করতে এসেও খালি হাতেই ফিরতে হল তাঁদের। সকাল থেকে চলা ইমরানের গ্রেফতারি নিয়ে তৈরি নাটকীয় পরিস্থিতির মোড় আচমকাই ঘুরে গেল শেষ দুপুরে। ইমরানের বাড়িতে পৌঁছে পুলিশ কর্তারা জানালেন, বাড়ি ভিতর ঢুকে ইমরানকে খুঁজে পাননি তাঁরা।
রবিবার সকালেই রটে গিয়েছিল ইমরান খানকে পুলিশের গ্রেফতার করতে আসার খবর। শোনা গিয়েছিল ইসলামাবাদ এবং করাচি থেকে পুলিশ আসছে লাহোরে। ইমরানের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করবে বলে। ইমরান যে বাড়িতেই রয়েছেন, সেই তথ্য পুলিশের কাছে ছিল কি না তা অবশ্য স্পষ্ট করেনি তারা। তবে পুলিশ আসছে শুনেই লাহোরের ইমরানের জ়ামান পার্কের বাড়িটিকে ঘিরে ফেলেন তাঁর সমর্থকেরা। দুপুরে সেখানেই আসে পুলিশ। সমর্থকদের ভিড় এড়িয়ে বাড়ির ভিতরেও ঢোকে। কিন্তু সেখানে ইমরানকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গোটা বাড়ি খুঁজে দেখে পুলিশ বলে দেয়, ‘‘এসপি (পুলিশ সুপার) ইমরানের ঘরে গিয়েছিলেন। পুলিশের বড় দল এসেছিল তাঁকে গ্রেফতার করতে। কিন্তু ইমরান সেখানে ছিলেন না।’’
পুলিশের ওই বিবৃতির পর ইমরান কোথায় থাকতে পারেন, তা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। সন্ধে পর্যন্ত অবশ্য এ ব্যাপারে পুলিশের তরফে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। যদিও পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডন জানিয়েছে, ইমরান সন্ধ্যায় একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করবেন, যাতে তাঁর মামলার শুনানি জনতার দরবারে প্রকাশ্যে হয়। ইমরানের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে সব ক’টি মামলাই ভুয়ো।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে পাওয়া উপহার সরকারি ভান্ডার বা তোষাখানায় জমা না দিয়ে, মোটা দামে বিক্রি করার অভিযোগ ছিল ইমরানের বিরুদ্ধে।এই জন্যই পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ইমরানের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গত অক্টোবরে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন ইমরান। পরে তা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার একাধিক শুনানিতে উপস্থিত হননি ৭০ বছর বয়সি পিটিআই নেতা। সেই অভিযোগেই ইমরানকে গ্রেফতার করতে রবিবার ইসলামাবাদ থেকে লাহোরে ইমরানের জ়ামান পার্কের বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ।
তবে ইমরান তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে তৈরি নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যেই একটি টুইট করেন রবিবার দুপুরে। দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইমরান লিখেছিলেন, ‘‘এসএসকে যখন একটি ৮০০ কোটি টাকার তহবিল তছরূপ এবং ১৬০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে, তখন তাঁকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসিয়ে দেন দেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়া। তার পর থেকে তিনি নিজের পিঠ বাঁচাতে একে একে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তকারীদের সরিয়ে ফেলেছেন এসএস (শাহবাজ শরিফ)।’’ ইমরান এ-ও বলেছিলেন যে, ‘‘এ ভাবেই একটা দেশে অরাজকতা তৈরি হয়।’’