ইমরান খান। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের আগে স্বস্তিতে নেই সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। স্বস্তিতে নেই তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফও। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে নির্বাচন। তার আগের সপ্তাহেই তিনটি পৃথক মামলায় সাজা পেয়েছেন বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি ইমরান। মাথার উপরে একাধিক মামলার খাঁড়া ঝোলায় চলতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না ইমরান। সম্প্রতি দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র না থাকার যুক্তি দিয়ে তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাটও কেড়ে নিয়েছে সে দেশের নির্বাচন কমিশন।
এই পরিস্থিতিতে জেলবন্দি ইমরান নেপথ্যে থেকেই দলকে জেতাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। আদিয়ালা জেলের ৮০৪ নম্বর কয়েদি ইমরানের অনুপস্থিতি যাতে ভোটারেরা টের না পান, তার জন্য চেষ্টার কসুর করছেন না পিটিআই সমর্থকেরা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-কে ব্যবহার করে ইমরানের ভাষণ শোনানো হচ্ছে দলের বিভিন্ন জনসভায়। পিটিআইয়ের দাবি, এই প্রথম পাকিস্তানের কোনও রাজনৈতিক দল ভোটের প্রচারে এআই-কে ব্যবহার করছে। এমন ভাবে ভাষণ শোনানো হচ্ছে যে, জনতার মনে হতে পারে জেল থেকেই তাঁদের উদ্দেশে বার্তা দিচ্ছেন ইমরান। তা ছাড়া টিকটকের মতো সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ইমরানের পুরনো বক্তৃতা।
এ বার নতুন প্রার্থীদের উপরেই ভরসা রাখতে চাইছে ইমরানের দল। কারণ দলের শীর্ষস্থানীয় অধিকাংশ নেতাই হয় জেলে, নয় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তা ছাড়া ইমরানের ক্রিকেটীয় অতীতকে মনে করিয়ে দিতে যে ক্রিকেট ব্যাটকে নির্বাচনী প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করত তারা, তা-ও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পিটিআই প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী লড়াইতে নেমেছেন। পিটিআইয়ের দাবি, পাক সেনার সাহায্য নিয়ে নির্বাচনে জিততে চেষ্টা করবে দেশের আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ বা পিএমএল-এন। তবে দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিরক্ত মানুষ ইমরানের ‘দুর্নীতি হটাও’য়ের ডাকে সাড়া দেবেন বলে আশাবাদী পিটিআই সমর্থকেরা।
২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হন ইমরান। তার পরে ২০২৩ সালের ৫ অগস্ট তাঁকে কারাদণ্ড দেয় ইসলামাবাদ কোর্ট। তোশাখানা মামলায় তিন বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়েছিল ইমরানকে। গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ইমরান এবং কুরেশিকে জামিন দিয়েছিল। তবে জামিন পেলেও তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্য মামলাগুলির জন্য জেলেই ছিলেন ইমরান। পরে আরও তিনটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।