বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। — ফাইল চিত্র।
এক বছর আগে গাজ়া ভূখণ্ড থেকে স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাসের হামলার পরে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি। সোমবার সেই হামলার বর্ষপূর্তিতে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বললেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত আমরাই জয়ী হব।’’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাসের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী আল কাশিম ব্রিগেড রকেট হানার পাশাপাশি ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল। হামাসের হামলায় নিহত ইজ়রায়েলির সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪০০। তা ছাড়া প্রায় তিনশো ইজ়রায়েলি নাগরিককে পণবন্দি করে নিয়ে গিয়েছিল হামাস। তার পরেই এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
এক বছরে পা দিল ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ। এক বছর পরে আজ পরিস্থিতি ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে? অকিঞ্চিৎকর সামরিক শক্তি হামাসের বিরুদ্ধে এক বছর ধরে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে কতটা সাফল্য পেয়েছে পরমাণু ক্ষমতাধর রাষ্ট্র ইজ়রায়েল? গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজ়ায় শুরু হওয়া ইজ়রায়েলি সেনার এই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন আয়রর সোর্ড’। গাজ়ায় হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার পণ করেছেন নেতানিয়াহু। গত অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব পাশ হয়েছিল। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা।
বিমানহানা, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি গত ডিসেম্বর থেকে প্যালেস্টাইনি ভূখণ্ডে ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ শুরু করে গাজ়ার ৮০ শতাংশ এলাকাই কব্জা করেছে ইজ়রায়েল। গাজ়ার পাশাপাশি আর এক প্যালেস্টাইনি ভূখণ্ড ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও চলছে হামলা। গাজ়ার-ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের পাশাপাশি ইরান, লেবানন, সিরিয়ার মাটিতে আছড়ে পড়েছে তেল আভিভের ক্ষেপণাস্ত্র। ইসমাইল হানিয়া, সালে আল-অরৌরি, বিলাল আল-কেদরা, রাওহি মুস্তাফার মতো হামাস নেতাদের পাশাপাশি নিহতদের তালিকায় রয়েছেন ৬৬ হাজারেরও বেশি সাধারণ প্যালেস্টাইনি নাগরিক।
এক বছর আগে হামাসের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া যুদ্ধ এখন শুধু গাজ়ায় সীমাবদ্ধ নেই। লেবাননের হিজ়বুল্লা, ইয়েমেনের হুথি সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাশাপাশি ইজ়রায়েল বিরোধী যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে ইরানের মতো দেশ। ইরান সেনার বিশেষ বাহিনী ‘রেভোলিউশনারি গার্ডস অ্যারোস্পেস ফোর্স’ ইজ়রায়েলি ভুখণ্ডে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নিজেদের শক্তি বুঝিয়ে দিয়েছে। কার্যত তিনটি ফ্রন্টে যুদ্ধ চালাতে হচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনীকে। নেতানিয়াহুর ‘লক্ষ্যপূরণ’ তাই সহজ নয় বলেই মনে করেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।