সোমবার বৈঠকের প্রাকমুহূর্ত।
স্পেনের রাজধানীতে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠক শুরু হল সোমবার। তৃণমূল স্তর থেকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান উঠে এল সেখানে। কিন্তু একই দিনে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অক্সফ্যাম তাদের সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করে আঙুল তুলল ধনী দেশগুলোর দিকেই।
রিপোর্ট বলছে, গত এক দশকে পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়ার পিছনে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। বছরে প্রায় দু’কোটি মানুষকে ঘর ছাড়তে হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে। রিপোর্ট এটাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে, এখন পৃথিবীতে সংঘর্ষ-হানাহানির কারণে যত মানুষ স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হন, তার তিন গুণ বেশি বাধ্য হন জলবায়ুগত কারণে। ভূমিকম্প বা অগ্ন্যুৎপাতের মতো বিপর্যয়ের চেয়ে সাত গুণ বেশি স্থানান্তরণ হয় জলবায়ু বিপর্যয়ের জেরে। প্রতি দু’সেকেন্ডে এখন এক জন করে মানুষ পৃথিবীর কোথাও না কোথাও হয় হারিকেন-সাইক্লোন, নয় দাবানল বা অন্য কোনও বিপদের মুখে ঘর ছাড়ছেন।
এইখানেই ধনী দেশগুলির ভূমিকার সমালোচনা করেছে অক্সফ্যাম। তাদের অভিযোগ, এই চরম বিপদের দিনে গরিব দেশগুলির দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে না প্রথম বিশ্ব। জলবায়ুগত কারণে জরুরি অবস্থা তৈরি তার মোকাবিলায় গরিব দেশগুলির জন্য কোনও আলাদা অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়নি। মাদ্রিদের মঞ্চ থেকে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতির দাবি জানিয়েছে তারা। তাদের বক্তব্য, ‘‘ধনী দেশগুলো বিপদে ইন্ধন দিয়ে চলেছে আর গরিব দেশগুলিকে তার জন্য সবচেয়ে বেশি দাম দিতে হচ্ছে।’’
এ দিনের বৈঠকের উদ্বোধনী বক্তৃতায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসও বলেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে সভ্যতাই যখন সঙ্কটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে, তখন ‘আশা’ এবং ‘আত্মসমর্পণ’-এর মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়া ছাড়া মানবজাতির কাছে আর কোনও উপায় নেই।’’ পরিবেশ সচেতনতার কথা সম্পূর্ণ ভুলে গিয়ে যে ভাবে মানুষ নানা কুঅভ্যাসের কাছে আত্মসমর্পণ করে চলেছে, তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। অন্য দিকে, এ দিনই আর একটি মঞ্চে আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেও বিশ্ব যেন এখনই আমেরিকার উপরে আস্থা হারিয়ে না ফেলে।