ছবি সংগৃহীত
বিশ্ব জুড়ে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে সঙ্গেই জলবায়ুর পরিবর্তন উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এর ফলে মানবাধিকার সঙ্কটের মুখে। এ ভাবেই আজ সতর্কবার্তা দিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাই কমিশনার মিশেল বাশেলে। তাঁর বক্তব্য, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র সংক্রান্ত সঙ্কট পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ত্র্যহস্পর্শের জেরে আদতে সভ্যতা ও মানবাধিকার সঙ্কটে। বাড়ছে বৈষম্যও। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। এর পরেই বাশেলে জানান, যে হেতু পরিবেশগত বিপদ ক্রমশ বাড়ছে, ফলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি মানবাধিকার।
আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত কাউন্সিলের বৈঠকে জার্মানির বন্যা পরিস্থিতি ও ক্যালিফর্নিয়ার দাবানলের কথাও উল্লেখ করেছেন বাশেলে।
উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ের প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পশ্চিম জার্মানি, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের বহু এলাকা। নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং হড়পা বানে ক্ষতিগ্রস্ত হন প্রচুর মানুষ। অন্য দিকে দাবানলে বিধ্বস্ত ক্যালিফর্নিয়া। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ার জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন দমকলকর্মীরা। এ দিকে, উত্তর ক্যালিফর্নিয়ার কিছু অঞ্চলেও আগুন দেখা গিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বিধ্বংসী দাবানলে বিপর্যস্ত দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনের আন্দালুসিয়ার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলও। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার সেনা নামাতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। বনভূমি সংলগ্ন শহর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০০ জনেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কয়েক দিন আগেই ঘূর্ণিঝড় ইডা-র তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়েছিল আমেরিকা। নিউ ইয়র্কের মতো শহরে জারি করতে হয়েছিল হড়পা বানের সতর্কতা। সারা বিশ্বের কাছে ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের দিকটি, এই বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই মিশেলের এই বক্তব্য।
রাষ্ট্রপুঞ্জের আইপিসিসি রিপোর্টে গোটা বিশ্বে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি প্রকাশের পরেই চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড বা আইএমএফ বিভিন্ন দেশকে আরও বেশি করে ‘গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট’ করার অনুরোধ করেছে।
এ দিকে, ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডের প্রাক্তন গভর্নর মার্ক কার্নি জানিয়েছেন, কার্বন নিঃসরণের হার নিয়ন্ত্রণে আনা এবং বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রতিটি দেশের জোট বেধে কাজ করা উচিত। এ ক্ষেত্রে চিরাচরিত শক্তি যেমন, জীবাশ্ম জ্বালানির (কয়লা, খনিজ তেল) ব্যবহার কমিয়ে প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত সম্পদ (সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি) ব্যবহারে জোর দিয়েছেন তিনি।