প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী চয় ডক-শিনের ছেলে চয় ইন-গুক।—ছবি এপি।
বাবার পথ অনুসরণ করলেন তিনিও। দক্ষিণ কোরিয়া ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে উত্তর কোরিয়ায় ফিরে গেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী চয় ডক-শিনের ছেলে চয় ইন-গুক। শনিবার তিনি পিয়ংইয়্যাংয়ে পা রেখেছেন বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম। তাঁর এই ‘ফিরে যাওয়া’র বিষয়টিকে বেশ অর্থবহ মনে করা হচ্ছে। নিজেদের বিপন্ন অর্থনীতি নিয়ে সঙ্কটে থাকা উত্তর কোরিয়া এতে প্রচার করার সুযোগ পাবে যে, দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে তাদের শাসন ব্যবস্থা ভাল। সে কারণেই ফিরে এসেছেন বছর বাহাত্তরের ইন-গুক।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যেই ইন-গুকের একটি বিবৃতি আপলোড করা হয়েছে। তাতে তিনি জানিয়েছেন, বাবা-মায়ের শেষ ইচ্ছেকে সম্মান জানাতেই এখানে এসেছেন তিনি। দুই কোরিয়াকে ফের এক করার কাজেই বাকি দিনগুলো কাটাতে চান। এখানে কিম জং উনের নেতৃত্বে সেই কাজই চালিয়ে যাবেন।
দুই কোরিয়ায় ছড়িয়ে থাকা পরিবারের লোকজনকে নিজেদের মধ্যে ফোনে কথা বলতে, চিঠি পাঠাতে বা ই-মেল করতে হলেও বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। তবে উত্তর কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য ইন-গুক কোনও অনুমতি নেননি বলে সোলের তরফে জানানো হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমের জল্পনা, উত্তর কোরিয়ার দেওয়া ভিসা নিয়ে বেজিং থেকে সে দেশে উড়ে গিয়েছেন ইন-গুক।
১৯৫০-৫৩-র যুদ্ধের পর থেকে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে গিয়েছেন রাজনৈতিক দমন ও দারিদ্র থেকে বাঁচতে। দক্ষিণ থেকে উত্তরে পাড়ি দেওয়ার নজির বেশি নেই। কেউ গেলেও কিমের দেশ তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়। গত বছর এমন দু’জনকে ফেরত পাঠিয়েছিল তারা। তবে ‘হাই-প্রোফাইল’ ইন-গুকের ব্যাপারটি আলাদা। মনে করা হচ্ছে তাঁর ক্ষেত্রে এমনটা করা হবে না। বরং ইন-গুকের হাত ধরে দেশের ভাবমূর্তি খানিকটা শুধরে নিতে চাইছে কড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে আর্থিক দুরবস্থার সঙ্গে লড়াই চালানো দেশটি।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পার্ক চুং হি-র সঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্ক এবং দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর বেশ কয়েক বছর পর, ১৯৮৬ সালে সস্ত্রীক দক্ষিণ থেকে উত্তর কোরিয়ায় চলে এসেছিলেন গুকের বাবা। পরে দু’দেশের সুসম্পর্ক তৈরির স্বার্থে দু’জনকেই বিভিন্ন সংগঠনের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাতে দেখা গিয়েছে। ইন-গুকের ক্ষেত্রে তেমনটা হয় কি না তা অবশ্য সময়েই বলবে।